Connect with us

আন্তর্জাতিক

আত্মরক্ষার্থে চীনা উপকূলে রণতরী প্রস্তুত তাইওয়ানের

Published

on

taiwan_webআন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে খুব দ্রুত যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘনিয়ে উঠতে চলেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়৷ বুধবার বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে যুদ্ধজাহাজ পাঠাল তাইওয়ান। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল চীনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পরই নিজেদের জলসীমা সুরক্ষিত রাখতে যুদ্ধজাহাজ পাঠাল তাইপেই।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের দৃপ্ত ঘোষণা, স্বদেশের অধিকার অটুট রাখবে তাঁর সেনাবাহিনী। তাইওয়ান অধিকৃত তাইপিং দ্বীপপুঞ্জের দিকে এগিয়ে গিয়েছে যুদ্ধজাহাজটি। পাশাপাশি আমেরিকা, ভারত ও জাপান যেমন দক্ষিণ চীন সাগরে টহলদারি জাহাজ পাঠাচ্ছিল, তেমন ভাবেই টহলদারি চালিয়ে যাবে। তাইওয়ান দক্ষিণ চীন সাগরে যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর সপ্তাহখানেক আগে থেকেই চীনা নৌসেনার একাধিক রণতরী সেখানে অবস্থান করছে। অতএব দক্ষিণ চীন সাগর যে আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে, তা নিয়ে সংশয় নেই ওয়াকিবহাল মহলের।
বাণিজ্যিক জলপথ হিসাবে বহুল ব্যবহৃত দক্ষিণ চীন সমুদ্রের অধিকার নিয়ে মঙ্গলবার চীনের বিরুদ্ধে কঠোর রায় দিয়েছে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল৷ সেই রায়ের জেরে আজ তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন৷ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রায় যা-ই হোক না কেন, দক্ষিণ চীন সমুদ্র থেকে তাদের নৌবহর সরাবে না তারা৷ কারণ দক্ষিণ চীন সমুদ্র নিয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালের রায়কে তারা মানে না৷ স্বীকার করে না৷ বেজিংয়ের এই ঔদ্ধত্যেই চটেছে ওয়াশিংটন৷ চীনের অনধিকার চর্চা নিয়ে পাল্টা গর্জন করেছে তারাও৷ জানিয়ে দিয়েছে, আন্তর্জাতিক আদালতের বক্তব্য না শুনে যদি দক্ষিণ চীন সমুদ্র থেকে নৌ বাহিনী না সরায় চীন তবে তারাও প্রস্তুত রুখে দাঁড়াতে৷ বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের এই প্রান্তীয় এলাকায়৷
আন্তর্জাতিক আদালত তাদের রায়ে জানিয়েছিল, দক্ষিণ চীন সমুদ্রের উপর চীনের দাবি করা ‘ঐতিহাসিক অধিকারের’ কোনও আইনি ভিত্তি নেই৷ ‘নাইন ড্যাশ লাইন’ দিয়ে দক্ষিণ চীন সমুদ্রের যে ৯০ শতাংশ এলাকার দখল চীন নিতে চাইছে, তা আদতে রাষ্ট্রসংঘ সম্মেলনের সমুদ্রবিধির বিরোধী৷ এই বিধি অনুযায়ী যেকোনও দেশের জলসীমার দুই নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকাকেই কেবল সেই দেশের নিজস্ব জলসীমা বলে ধরা হয়৷ বাকি অংশ পড়ে আন্তর্জাতিক জলসীমার অধীনে৷ সেখানে যেকোনও দেশ প্রবেশ করতে পারে৷ প্রয়োজনে বাণিজ্যিক কাজেও ব্যবহার করতে পারে৷ কিন্তু, চীন সমুদ্রের ৯০ শতাংশেই নিজেদের অধিকার দাবি করায় সমুদ্র সংলগ্ন বাকি দেশগুলির সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হচ্ছে৷ চীন ছাড়াও ফিলিপিনস, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম বাণিজ্যিক কারণে দক্ষিণ চীন সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল৷ তাই চীনের ওই জবরদখলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে নালিশ জানিয়েছিল দেশগুলি৷ তারই রায় আজ দিল আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল৷
১৯৪০ সালের একটি ম্যাপ থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত৷ ওই ম্যাপ দেখিয়ে চীন দাবি করেছিল দক্ষিণ চীন সাগর আদতে চীনেরই অধিকার৷ এর নব্বই শতাংশ এলাকায় নিজেদের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সমুদ্রে ছোট ছোট কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করতে শুরু করে তারা৷ বেশ কিছু প্রবাল প্রাচীর এবং সমুদ্রের মধ্যে জেগে থাকা পাথুরে অংশে বালি ফেলে তৈরি করে প্যারাসেল আইল্যান্ডস এ স্প্র্যাটলি আইল্যান্ডস৷ ওই সব দ্বীপে সামরিক পরিকাঠামো ও রানওয়ে তৈরি করে বসানো হয় মিসাইল লঞ্চারও৷ ন’টি ড্যাশ দিয়ে ওই সব দ্বীপ-সহ দক্ষিণ চীন সমুদ্রের ৯০ শতাংশের অধিকার দাবি করে চীন৷ কিন্তু, আন্তর্জাতিক আদালত তাদের রায়ে জানিয়ে দেয় ওই দ্বীপগুলি জোয়ারের সময় জলের নিচে চলে যায়৷ তাই চীনের তৈরি ওই ভূখণ্ডকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া যাবে না৷

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *