Connect with us

বিবিধ

এক নারী পুলিশ কনস্টেবলের ফেসবুক ফলোয়ার ৭ লাখ!

Published

on

%e0%a7%a7স্মিতা টান্ডি ছত্তিশগড় পুলিশের এক নারী কনস্টেবল।

অনলাইন ডেস্ক: স্মিতা টান্ডি, কোনও সেলিব্রিটি নন। রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী বা বড় সরকারী আমলাও নন। তবুও ফেসবুকে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়েছে। আর এই বিরাট সংখ্যায় ফ্যান ফলোয়িং হয়েছে দুবছরের কিছুটা কম সময়ের মধ্যে।
স্মিতা টান্ডি ছত্তিশগড় পুলিশের এক নারী কনস্টেবল। ভারতের সবথেকে বড় ইস্পাত কারখানা যে শহরে, সেই ভিলাইতে কর্মরত তিনি। এই বিপুল ফ্যান ফলোয়িং-কে তিনি কাজে লাগান দু:স্থ মানুষকে সাহায্য করতে।
যেমন আজ সকালেই তিনি একটি পোস্ট করেছেন: ‘বিলাসপুর শহরের রাস্তায় যদি কাউকে ঠান্ডার মধ্যে লেপ-তোষক ছাড়া শুয়ে থাকতে দেখেন কেউ, তাহলে তিনি যেন মোবাইলে খবর দেন। দ্রুত পৌঁছিয়ে দেওয়া হবে লেপ-কম্বল।’
এছাড়াও গরীব রোগীদের চিকিৎসা, কোনও শিশু হারিয়ে গেলে তার খোঁজ করা – সবই মিস টান্ডি করেন ফেসবুকের মাধ্যমে। “আমার পোস্টগুলো দেখেই সম্ভবত এত মানুষ আমাকে ফলো করে থাকেন। আমি টাকা খরচ করে লাইক বা ফলোয়ার বাড়াইনি।”-বিবিসি বাংলার সাথে আলাপকালে বলছিলেন মিস টান্ডি।
মাত্র দুবছরেরও কম সময়ে ফেসবুকের মাধ্যমে মিস টান্ডি সাধারণ মানুষকে সাহায্য করছেন ঠিকই, তবে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে তাঁর এই উদ্যোগের শুরু ২০১৩ সালে। পুলিশের চাকরীতে ঢুকে যখন তিনি প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন, সেই সময়ে তাঁর বাবা মারা যান হঠাৎই।
“অর্থের অভাবে ভাল চিকিৎসা করাতে পারিনি বাবাকে। তাই বন্ধুদের সঙ্গে একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম যে কারও অর্থের প্রয়োজন পড়লে আমরা সবাই মিলে তা যোগাড় করে দিতাম। এখন আমি ফেসবুক ব্যবহার করে সেই কাজটাই করি। বহু মানুষের কাছে খুব দ্রুত প্রয়োজনটা জানাতে পারি। তবে প্রতিটা ক্ষেত্রেই আমরা যাচাই করে নিই” -বলছিলেন স্মিতা টান্ডি।

ফেসবুকে স্মিতা টান্ডির ফলোয়ারের সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়েছে।

মিস টান্ডি যে জেলায় কর্মরত, সেই দূর্গ-এর পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট অমরেশ কুমার মিশ্র বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “আমি বুধবারই মাত্র জানতে পেরেছি যে ওর এত ফলোয়ার! সেটা তো ওর ব্যক্তিগত উদ্যোগ, এর সঙ্গে পুলিশের চাকরির কোনও যোগ নেই। তবে ও যে সামাজিক মাধ্যমে খুব সক্রিয় আর টেকনিক্যাল স্কিল আছে খুব ভালো, সেটা জানতাম। এরকম কাউকে আমরা একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য খুঁজছিলাম। স্মিতা নিজেই এগিয়ে আসে।”
মাস তিনেক আগে দূর্গ পুলিশ কয়েকটি নারী সুরক্ষা দল গড়েছে। সাধারণ পোষাকে, সাধারণ গাড়িতে ওই নারী পুলিশকর্মী দলগুলো শহরে ঘুরে বেড়ায়। কোনও নারী বিপদে পড়লে বা ইভ টিজিংয়ের শিকার হলে পৌঁছে যায় দলটি। আর নারী সুরক্ষা দলের কাছে খবর পৌঁছানোর মাধ্যম হলো ফেসবুক, হোয়াটস্অ্যাপ বা টুইটার।
“এখনতো যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ফেসবুক – হোয়াটস্অ্যাপ। সামাজিক মাধ্যমে ভিলাই শহরের নারীরা কে কোন বিপদের কথা জানাচ্ছেন, তার ওপরে নজর রাখাটাই কনস্টেবল টান্ডির দায়িত্ব। ওর সঙ্গে আর একজন মাত্র সহকারী আছে। ওই খবর দেয় নারী সুরক্ষা দলের কর্মীদের যাতে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া যায়”- বলছিলেন এস পি মি. মিশ্র। এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে বিশেষত ভিলাই শহরে ইভ টিজিং একরকম বন্ধই হয়ে গেছে বলে দাবী মি. মিশ্রর।

মাস তিনেক আগে দূর্গ পুলিশ কয়েকটি নারী সুরক্ষা দল গড়েছে। সাধারণ পোষাকে, সাধারণ গাড়িতে ওই নারী পুলিশকর্মী দলগুলো শহরে ঘুরে বেড়ায়।

মিস টান্ডিকে নিয়ে আজ কয়েকটি হিন্দী সংবাদপত্রে খবর ছাপার পরে একদিনেই তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় আট হাজার।
“এদের মধ্যে কেউ কেউ অসভ্যতাও যে করে না তা না। তবে খুব বেশী খারাপ কথা লিখলে তবেই আমি নজর দিই। আর তারপরে ওই লোককে ঠিক একটাই কড়া মেসেজ পাঠাই। তাতেই অসভ্যতা বন্ধ হয়ে যায়,” জানালেন স্মিতা টান্ডি। হঠাৎ এই সেলিব্রিটি স্ট্যাটাস পেয়ে গিয়ে যে তিনি অভিভূত, সেটাও ফেসবুকে লিখতে ভোলেননি। তবে তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রায় ছয় ঘন্টা অপেক্ষা করতে হলো।
সকালেই বিনয়ের সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছিলেন, “আমার কাজটা তো খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমার্জেন্সি ডিউটি এটা। কাজ শেষ হওয়া মাত্রই আপনাকে ফোন করবো”।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *