Connect with us

কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যা

Published

on

kurigram-house-wife-killed-photo-11-10-16শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের নাজিরা ফকির পাড়া এলাকায় মোর্শেদা (২৪) নামের এক গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যগ পাওয়া গেছে। মোর্শেদার বাবার নাম মো. আব্দুর রহমান এবং তার বাড়ি রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের হাজীপাড়া গ্রামে।
মোর্শেদার পিতা আব্দুর রহমান জানান, ছোট বেলা থেকে মোর্শেদা এক আর্মি অফিসারের বাসায় কাজের মেয়ে হিসেবে বড় হয়। মোর্শেদা বিবাহ উপযুক্ত হলে সেই আর্মি অফিসার রহমানকে জামাই দেখতে বলে বিনিময়ে জামাইকে চাকুরী নিয়ে দেয়া হবে। সে অনুযায়ী আব্দুর রহমান কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের নাজিরা ফকির পাড়া এলাকার মৃত সাইফুর রহমান এর পুত্র মো. সোহেল মিয়ার (৩২) সাথে বিবাহ ঠিক করেন। এই বিয়ে হয় প্রায় ৭ বছর আগে।
রহমান আরো জানান, বিয়ের পর জামাই সোহেলকে চট্রগ্রাম বিএমএ-তে কুক পদে চাকুরীর ব্যবস্থা করা হয়। বিয়ের ১ বছর যেতে না যেতেই মোর্শেদার উপর স্বামী সোহেল সহ পরিবারের সকল সদস্যদের পক্ষ থেকে নির্যাতন শুরু হয়। তখন আব্দুর রহমান মেয়েকে তার বাড়িতেই রেখে দেন। এর পর আবারো সোহেল নির্যাতন করবে না মর্মে কথা দিয়ে মোর্শেদাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। কিন্তু এর পরেও সোহেল সহ বাড়ির অন্যান্য সদস্য সোহেলের বড় ভাই আতা, মা ছকিনা বেগম, বাড়িতে থাকা দু‘জন বড় বোন চায়না ও বিউটি সহ সোহেলের ছোট ভাই সাজু মিয়া মিলে প্রায় সময় মোর্শেদাকে বেদম প্রহার করা হত। ৭ বছরের সংসার জীবনের প্রায় ৫ বছর বাবা আব্দুর রহমানের বাড়িতে অবস্থান করে মোর্শেদা। দাম্পত্য জীবনে মোর্শেদার একটি ৩ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। সর্বশেষ মোর্শেদা বেশ কিছু দিন আগে স্বামী সোহেলের বাসায় যায়। সে সময় সোহেল বাড়িতে ছিল।
উল্লেখ্য যে, সোহেল সেই আর্মি অফিসারের সহায়তায় ছোট ভাই সাজুকেও একই পোষ্টে চাকুরী নিয়ে দেয়। চাকুরীর সুবাদে সাজু বাইরে থাকলেও ছুটিতে এসে প্রায় ১০ দিন আগে মোর্শেদাকে জানে মেরে ফেলার হুমকী প্রদান করে কর্মস্থলে চলে যায়। সোহেলের অবর্তমানে মোর্শেদা বাড়িতে থাকাকালীন সময়ে গত শনিবার আতা‘র নেতৃত্বে দুই বোন এবং মা মিলে মোর্শেদাকে বেদম প্রহার করা হলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে সরাসরি চট্রগ্রাম বিএমএ একাডেমিতে যায়। সেখানে কর্মরত সোহেল মোর্শেদাকে অনেক অনুরোধ করে পুনরায় বাড়িতে পাঠায়। গত সোমবার দুপুরের আগে মোর্শেদা বাড়িতে পৌছালে আবারো আতা ও পরিবারের সদস্যগন মোর্শেদাকে বেদম মারপিট করে আহত করে। এমতবস্থায় বিকেল ৩টার দিকে মোর্শেদার মা মল্লিকা বেগম মেয়ের সংবাদ নেয়ার জন্য ফোন দিলে মোর্শেদা করুণ আর্তনাদ করে জানায়,“মা ওরা আমাকে মনে হয় মেরে ফেলবে”। এর পর ঐদিন সন্ধ্যায় সোহেল মোবাইল ফোনে আব্দুর রহমানকে জানায়, মোর্শেদা হাসপাতালে মারা গেছে। এমতবস্থায় রহমানের লোকজন দ্রæত কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে এসে রাত ৮টার দিকে লাশ সনাক্ত করে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে যারা মোর্শেদাকে নিয়ে আসে তারা দায়িত্বরত চিকিৎসককে জানায়, এই মহিলা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্বহত্যার চেষ্টা করেছিল।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার শাহিনুর রহমান শিপন জানান, সোমবার সন্ধ্যা ৬ টা ১০ মিনিটে মোর্শেদাকে ইমারজেন্সিতে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত হিসেবে পান।
এব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সোবহান জানান, থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *