কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের সাথে রোগীর স্বজনের হাতাহাতি
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে কেবিন ভাড়া ও রোগী না দেখাকে কেন্দ্র করে এক রোগীর জামাতার সাথে চিকিৎসকের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চিকিৎসকের পোষা নির্দিষ্ট এক ক্লিনিকের কর্মচারীরা রোগীর জামাতা আব্দুল আলীমকে এলোপাতারী মারপিট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম পৌর সভার খলিলগঞ্জ এলাকার নবীর উদ্দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হলে স্বজনরা তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। এসময় তার স্ত্রী মোরশেদা বেগম যথারিতি জরুরী বিভাগে তার স্বামীকে দেখানোর পর ৩ নম্বর কেবিন ভাড়া নেয়। অতপর তার স্বামীকে দেখানোর জন্য রাউন্ডে থাকা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ হেলাল মিয়াকে অনুরোধ জানায়। এসময় ডাঃ হেলালের অনুমতি না নিয়ে কেবিন বরাদ্দ দেওয়ায় ঐ কেবিনে রোগী দেখতে অসম্মতি জানায়। এরপর রোগীর জামাতা আব্দুল আলীম খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে রাউন্ডে থাকা ডাঃ হেলালকে কাকতি-মিনতি করে কেবিনে নিয়ে এসে রোগী দেখায়। কেবিন থেকে ডাঃ বেরিয়ে যাওয়ার সময় পুনরায় ডাঃ হেলাল এবং রোগীর জামাতা মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে হাসপাতালের কর্তব্যরত কর্মচারী ও চিকিৎসক আব্দুল আলীমকে ধরে আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ নজরুল ইসলামের রুমে নিয়ে যায়। সেখানে আবাসিক চিকিৎসকের সামনে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে রোগীর জামাতা আব্দুল আলীমকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় ঐ চিকিৎসকের দালালেরা আবারো আব্দুল আলীমের উপর চড়াও হয়। এ ঘটনায় দুপুর ১২ থেকে ৩ টা পর্যন্ত হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হয়। এদিকে শহরের নির্দিষ্ট একটি ক্লিনিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ হাসপাতালের একটি সংঘ বদ্ধ দালাল চক্র ডাক্তারের পক্ষে স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে হাসপাতালে যায়।
রোগীর স্ত্রী মোরশেদা বেগম জানান, আমার স্বামী গুরুত্বর অসুস্থ। তাকে হাসপাতালের কেবিনে ভর্তি করে রাউন্ডে থাকা ডাঃ হেলালকে দেখার জন্য অনুরোধ জানাই। কিন্তু তিনি রোগী না দেখে বলেন, আমার অনুমতি না নিয়ে কে কেবিন ভাড়া দিয়েছে তাকে হাজির করা না হলে রোগী দেখবো না। পরে আমার জামাতা এসে ঐ ডাক্তারকে আবারো অনুরোধ করে রোগী দেখানোর পর বের হয়ে বারান্দায় যায়। এসময় আমার জামাতার সাথে ডাক্তারের কথাকাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে ডাক্তার উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালের কর্মচারীদের তাকে ধরে পেটাতে বলে। মুহুর্তেই ৫ থেকে ৭ জন লোক এসে আমার জামাতাকে জোড় করে ধরে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের নিয়ম না মেনে রোগীর স্বজন হাসপাতালের চিকিৎসকের সাথে অসৌজন্য মুলক আচরন করেছে। বিষয়টি সুরাহা করার জন্য আমার রুমে নিয়ে আসা হয়। সেখানেও সে ডাক্তারের উপর চড়াও হয়। এ ঘটনায় ডাঃ হেলাল আহত হয়। পরে আব্দুল আলীমকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে কর্তব্যরত চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলার অপরাধে মামলা দায়ের করা হবে।
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ইসতেশাম জানান, হাসপাতালের ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুল আলীম পুলিশ কাষ্টডিতে আছে। সরকারী কাজে বাধা দেয়ার অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্ততি চলছে।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর