জাতীয়
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা: শুনানি শুরু ৯ ফেব্রুয়ারি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় উচ্চ আদালতে বিচারাধীন দুই রিট আবেদনের রুল শুনানি শুরু হবে ৯ ফ্রেব্রুয়ারি।
উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় আটকে থাকা বিচারের পথ খুলতে সম্প্রতি উদ্যোগ নেয় মামলাকারী দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদকের আবেদনে জরুরি অবস্থার সময় করা মামলাটি জরুরি ক্ষমতা আইনে অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা নিয়ে রুলের শুনানি করতে বিষয়টি গত ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আসে। ওই দিন ৪ ফেব্রুয়ারির (গত কাল) কার্যতারিকায় বিষয়টি রাখার সিদ্ধান্ত দেয় আদালত। গত কাল বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চ শুনানি শুরুর দিন ঠিক করেন। এর মধ্যে খালেদার আরেকটি রিট আবেদনে দেওয়া রুলের শুনানির জন্যও আবেদন করে দুদক। গত কাল আদালত উভয় রুল শুনানির দিনই ৯ ফেব্রুয়ারি ঠিক করে দেয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল গৌরত রায় উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি জোটের হরতাল-অবরোধের মধ্যে খালেদার আইনজীবীরা কেউ আদালতে ছিলেন না। গত ২৮ জানুয়ারির শুনানিতে খালেদার পক্ষে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন আদালতে ছিলেন। খালেদার একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মাশুক হোসেন আহমেদের বেঞ্চ রুল জারির মাধ্যমে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছিল। দুদকের উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন। পরদিনই খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোকো সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন। মামলাটি জরুরি ক্ষমতা আইনের অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ২০০৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আলাদা দুটি রিট আবেদন করেন খালেদা ও কোকো। এর তিন দিন পর খালেদা ও কোকোর বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দেয় হাইকোর্ট। মামলাটি জরুরি ক্ষমতা আইনের অন্তর্ভুক্ত করা কেন ‘বেআইনি ও কর্তৃত্ব বহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে। তবে হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ পরে আপিল বিভাগে বাতিল হয়ে যায়। দুদক আইনে গ্যাটকো মামলা দায়েরের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৮ সালে আরেকটি রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া। তার আবেদনে হাইকোর্ট আবারও মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়। বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে বর্তমানে জিয়া এতিমখানা ও দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় চলছে সাক্ষ্যগ্রহণ। এছাড়া চলমান অবরোধে নাশকতার ঘটনায় তাকে হুকুমের আসামি করে একাধিক মামলা হয়েছে।