আন্তর্জাতিক
চতুর্পক্ষীয় শান্তি আলোচনা, ইউক্রেনের শেষ সুযোগ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে টেলিফোনে জার্মানী, ফ্রান্স ও ইউক্রেনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করবেন। জার্মানীর চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ইউক্রেন সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধের পরিকল্পনার জন্য চাপ দেয়ার পরিকল্পনা করছেন। মস্কোতে শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠককালে তারা রোববার ইউক্রেনের পেত্রো পোরোশেঙ্কর সাথে চতুর্পক্ষীয় আলোচনায় সম্মত হন। গত বছরের শুরুতে গণভোটের মাধ্যমে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত হয়। এরপর এপ্রিলে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রাশিয়াপন্থী বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৪শ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া হাজার হাজার লোক আহত হয়েছে এবং ১০ লাখেরও বেশি লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও সৈন্য দিয়ে সাহায্যের অভিযোগ করেছে। তবে ক্রেমলিন এ অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী শনিবারও অব্যাহত গোলাবর্ষণের খবর জানিয়েছে এবং অভিযোগ করেছে, বিদ্রোহীরা নতুন অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে বিদ্রোহীরাও সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে সীমান্তরেখা বরাবর হামলার অভিযোগ করেছে। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেরোশেঙ্ক পশ্চিমাদের প্রতি তাদেরকে সমর্থন ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তার আহবান জানিয়েছেন। মিউনিখে শনিবার নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি এ আহবান জানান। এ সময় তিনি ইউক্রেনে যে রাশিয়ার সৈন্য মোতায়েন রয়েছে তার স্বপক্ষে বেশ কয়েকটি পাসপোর্ট তুলে ধরেন। মিউনিখ সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল বলেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সফল হওয়ার কোন নিশ্চয়তা নেই। তবে সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। গত সেপ্টেম্বরে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে স্বাক্ষরিত অস্ত্রবিরতি চুক্তি আবারও সক্রিয় করতে একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। মিনস্কে অস্ত্রবিরতি চুক্তির পরও বিদ্রোহীরা আরো এলাকা দখল করে নিয়েছে, যা কিয়েভ ও ইউক্রেনের সমর্থকদের জন্য উদ্বেগজনক। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ ফরাসি-জার্মানী পরিকল্পনাকে সহিংসতা বন্ধের শেষ সুযোগ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি স্থায়ী শান্তি চুক্তি করতে ব্যর্থ হই, তবে সেখানে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হবে।’