Connect with us

জাতীয়

ছায়া শিক্ষামন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিকী

Published

on

ব্রিটেনের লেবার পার্টির সাংসদ টিউলিপ সিদ্দিকী ব্রেক্সিট ইস্যুতে ছায়া শিক্ষামন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি হ্যামস্টিড ও কিলবার্ন আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন।

ব্রেক্সিট কার্যকরে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিরোধী দল লেবার পার্টির পরিকল্পনার অংশ হওয়া থেকে বিরত থাকতে বিরোধী দলের ফ্রন্ট বেঞ্চ (শিক্ষা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী) থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিকী।

বিরোধী দলের নেতা জেরেমি করবিনের কাছে লেখা চিঠিতে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের প্রক্রিয়ায় অংশ নিলে সেটি হবে তার ভোটারদের সঙ্গে বেঈমানি।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন অনুষ্ঠিত ব্রেক্সিট গণভোটে টিউলিপের নির্বাচনী এলাকার ৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছে ইইউ ত্যাগ করার বিপক্ষে।
শিশু শিক্ষা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী টিউলিপ তার পদত্যাগপত্রে লিখেন, আমি সবসময় পরিষ্কারভাবে বলেছি, আমি হাম্পস্টিপ ও কিলবার্নে (নির্বাচনী এলাকা) ওয়েস্ট মিনিস্টারের (যুক্তরাজ্য পার্লামেন্ট) এর প্রতিনিধিত্ব করিনা বরং ওয়েস্ট মিনিস্টারে আমি আমার নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করি। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর থেরেসা মে’র হার্ড ব্রেক্সিট মোকাবেলা করার জন্য আমার কার্যকর পন্থা হচ্ছে ব্যাকবেঞ্চে।

ব্রেক্সিট কার্যকরে আর্টিকেল ৫০ বিলে লেবার এমপিদের সমর্থন ও থ্রি লাইন হুইপ (যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে দলীয় সিদ্ধান্ত মানতে কোনো দলের নেতার নির্দেশে সদস্যদের বাধ্য করার অবস্থা) জারির পরিকল্পনার কথা জানার পরে বৃহস্পতিবার এই ফ্রন্টবেঞ্চ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন টিউলিপ। তিনি বলেন, আমি আর্টিকেল ৫০ বিল বলবৎ করার সিদ্ধান্ত সমর্থন করি না, তাই আমি ফ্রন্টবেঞ্চে থাকতে পারবো না।

বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ ২০১৫ সালে প্রথম ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। গত সেপ্টেম্বরে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পরে বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিনের ছায়া মন্ত্রণালয়ে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

পদত্যাগপত্রে ব্রেক্সিট প্রসঙ্গে টিউলিপ লিখেন, ইইউ ত্যাগ আমার নির্বাচনী এলাকার জন্য অনেক অনিশ্চয়তা নিয়ে এসেছে এবং সেখানে বেশিরভাগ মানুষ মনে করে এতে সম্ভাব্য কোনো লাভ হওয়ার চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই বেশি হবে। টিউলিপ যোগ করেন, কোনো জটিলতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে নয় বরং তার নির্বাচনী এলাকার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ব্রিটেনের ৫৬ তম সাধারণ নির্বাচনে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে এমপি পদে বিজয়ী হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি, শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর বড় মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ। ১ হাজার ১৩৮ ভোটের ব্যবধানে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছিলেন টিউলিপ। টিউলিপ সিদ্দিকী পেয়েছিলেন ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট। আর কনজারভেটিভ পার্টির সায়মন মার্কাস পেয়েছেন ২২ হাজার ৮৩৯ ভোট।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ লন্ডনের মিচামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত এবং সিঙ্গাপুরে। ১৫ বছর বয়স থেকে তিনি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্নে বসবাস করছেন। এই এলাকায় স্কুলে পড়েছেন ও কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হওয়া টিউলিপ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গ্রেটার লন্ডন অথরিটি এবং সেইভ দ্য চিলড্রেনের সঙ্গেও কাজ করেছেন। ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি।

২০১৫ সালেও টিউলিপ ব্রিটিশ লেবার পার্টির ছায়া মন্ত্রিপরিষদে সংস্কৃতি, গণমাধ্যম ও ক্রীড়া বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হন।

নবনির্বাচিত লেবার পার্টির দলীয় নেতা জেরেমি করবিন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি টিউলিপকে তার ছায়া মন্ত্রিসভায় জুনিয়র সদস্য হিসেবে স্থান দেন।সূত্র: গার্ডিয়ান

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *