জাতীয়
জঙ্গি সংগঠনে যোগদান নয়, প্রেমের কারনে নিখোঁজ হয় ইরা
আরিফুল ইসলাম শ্যামল, শ্রীনগর(মুন্সীগঞ্জ)প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মাশুরগাঁও গ্রামের নুরুন নাহার ইরা (১৮) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী প্রায় এক মাস নিখোঁজ থাকার পর মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় শ্রীনগর থানায় স্বেচ্ছায় এসে হাজির হয়। নিখোঁজ ইরার পরিবারের আশংকা প্রকাশ করেছেন-তার সন্তান জঙ্গি সংগঠনের জড়িয়ে পড়েছে। নিখোঁজ হওয়ার পর একদিন মোবাইল ফোনে কথা হলে শিক্ষার্থী ইরা তার জানিয়েছে সে পবিত্র জায়গায় আছে। খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই।
মঙ্গলবার ইরার পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া একটি ছবির সূত্র ধরে মাঠে নামে পুলিশ। ছবিতে দাড়ি ওয়ালা এক যুবকের সাথে ইরা ও তার আরো দুই বান্ধবী রয়েছে। ওই যুবকের সন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় তার নাম সিরাজুল ইসলাম নয়ন (৩৫)। সে পাবনার বর্জনাথপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে। সিরাজুল ইসলাম বর্তমানে ঢাকার গুলশান-২ এর ৭২ নম্বর সড়কের ১৫ নং বাড়িতে অবস্থিত আহামেদ গ্রুপের কর্মকর্তা। ২০১৫ সালে সমষপুর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল খন্ড কালীন শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। ওই বছর এএসসি পরীক্ষার পূর্বে তিনি ইরাসহ আরো কয়েক জনের গাইড হিসাবে তিনমাস নিযুক্ত ছিলেন। সেই সূত্রে প্রেম এবং পরে তা প্রণয়ে রুপ নেয়।
গতকাল দুপুর দুইটার দিকে পুলিশ সিরাজুল ইসলামকে শ্রীনগর থানায় হাজির করার জন্য আহমেদ গ্রুপের কর্নধারকে অনুরোধ করলে সিরাজুল ইসলামকে ওই প্রতিষ্ঠানের একটি গাড়িতে করে তার কয়েকজন সহকর্মীসহ গুলশান থেকে শ্রীনগর পাঠান। সিরাজুল ইসলাম থানায় পৌছানোর আধ ঘন্টা পূর্বে ইরা সেচ্ছায় থানায় এসে হাজির হয় এবং তার জন্য অন্য কাউকে হয়রানি না করতে বলে।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাহিদুর রহমান জানান, তাদের কে আলাদা ভাবে বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে বলে সিলেটে মাজারে ছিল। তার কথার্বাতায় বিভ্রান্তমুলক হওয়ায় ব্যপক জিজ্ঞাসা করা হয়। পরে এক পর্যায়ে স্বীকার করে সিরাজুল ইসলাম নয়ন ও ইরা ২০১৬ সালে ২১ শে ফ্রেবায়ারী পরিবারের কাউকে না জানিয়ে তারা বিয়ে করে। এতদিন তারা ঢাকার গুলশাল থানাধীন বাড্ডা এলাকায় বসবাস করছিল।
ওসি জানান, পরে রাতে গুলশান থানার পুলিশ তারা যে বাসায় নিখোঁজ অবস্থায় বসবাস করছিল তা নিশ্চিত করে। আসলে তারা প্রেম করে বিয়ে করে হয়তো বাড়ী থেকে মানবে না তাই গা ঢাকা দেয়। গতকাল মধ্য রাতে সিরাজুল ইসলাম নয়নকে তার অফিসের লোকের কাছে ও ইরাকে তার পরিবারের কাছে আজ সকালে তুলে দেয়া হয় বলে জানান ওসি।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থী ইরা গত ১৯ জুন নিজ বাড়ি থেকে বের হলে আর ফিরে আসেনি। মা-বাবার ধারনা- তাদের সন্তান জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনায় গত ১০ জুলাই মা শামীমা আক্তার শ্রীনগর থানায় নিখোঁজের জিডি দায়ের করেন।