জাতীয়
জুম্মার খুৎবায় হস্তক্ষেপের পক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন
চলতি মাসের শুরুতে গুলশানে সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে রোববার আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রীসভা কমিটির এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মসজিদগুলোতে ইমামরা কোন ধরনের ধর্মীয় অনুশাসন প্রচার করছেন তার ওপর নজর রাখা হবে, এবং অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করা হবে।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শামীম আফজাল বলেন, “পৃথিবীর বহু দেশে খুৎবা সাধারণত রাষ্ট্র কর্তৃক রচনা করে দেয়া হয় এবং সেটা সকল মসজিদে পড়া হয়। আমাদের দেশে বিশেষ করে পাক-ভারত উপমহাদেশে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে এ সিস্টেমটা সেভাবে চালু হয় নাই।”
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় তিন লক্ষ মসজিদ আছে। সব মসজিদের খতিব এবং ইমামদের চিন্তা এবং দৃষ্টিভঙ্গি এক রকম নয়। ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, কোন কোন মসজিদে জুম্মার নামাজের খুৎবার সময় বাংলা বক্তব্যে এমন অনেক রাজনৈতিক বিষয়ের অবতারণা করা হয় যা পরোক্ষভাবে জঙ্গি কার্যক্রমকে উস্কে দিতে পারে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মনে করেন, কোরান ও হাদিসের আলোকে এবং দেশের সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে জাতীয়ভাবে খুৎবা রচনা করা যেতে পারে। দেশের বিজ্ঞ আলেমরা এই খুৎবা রচনায় সহায়তা করতে পারেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সৌদি আরবে মসজিদে প্রতি সপ্তাহে কী ধরণের খুৎবা পড়া হবে সেটি সরকারের তরফ থেকে একটি নির্দেশনা দেয়া হয়। বাংলাদেশেও বিষয়টি সেভাবে ভাবা হচ্ছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো কোন মতামত দেয়া যাচ্ছেনা। কারণ বিষয়টিতে এখনো সরকারের কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।
তিনি বলেন, “এখন থেকে একশ বছর আগে যত ওলামা ছিলেন তারা কোরআন এবং সুন্নাহকে আরবিতে পড়তেন, বুঝতেন এবং জ্ঞান অর্জন করতেন। বর্তমানে মাদ্রাসাগুলো থেকে দ্বিনী শিক্ষার কিছু ব্যত্যয় ঘটেছে। এ ব্যত্যয় পুনরুদ্ধার করতে গেলে আমাদের প্রকৃত আলেম তৈরি করতে হবে।”
মি: আফজালের মনে করেন, বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষাকে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ করতে হবে। এটি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয়ভাবে খুৎবা রচনায় দেশের বিজ্ঞ আলেমরা যদি সহায়তা করে তাহলে অনেকে ‘উপকৃত’ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন খুৎবা ইসলামের একটি মৌলিক দর্শন।
তিনি অভিযোগ করেন,অনেকে ইসলামের ‘ভিন্ন ব্যাখ্যা’ তুলে ধরছেন। সেজন্য খুৎবা জাতীয়ভাবে রচনা করা হলে মুসলমান জনগোষ্ঠী এটিকে সাধুবাদ জানাবে বলে তিনি মনে করেন।