Connect with us

আন্তর্জাতিক

তেল চোরাচালান, চাঁদাবাজি, চুরি ও মানবপাচার আই এস’র আয়ের উৎস

Published

on

graphic-isisআইএসকে জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ধনী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তাদের আয়ের উৎস কী, তা নিয়ে  সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লন্ডনের দি ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকা।

ওই প্রতিবেদনে গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে দাবি করা হয়েছে, মূলত তেল চোরাচালান, চাঁদাবাজি, চুরি ও মানবপাচার থেকে আয় করা অর্থ জঙ্গি তৎপরতায় খরচ করে আইএস।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের দাবি, এসব অবৈধ কাজের মাধ্যমে সংগঠনটি প্রতিদিন গড়ে ৩০ লাখ ডলারেরও বেশি পরিমাণ অর্থ আয় করে। আর ত্রাণকর্মী, গবেষক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, আইএস ইরাক ও সিরিয়ার যেসব অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়েছে, সেখানে অন্তত ১১টি গ্যাসক্ষেত্র আছে। এসব গ্যাসক্ষেত্র থেকে জঙ্গি সংগঠনটির কর্মীরা তেল চোরাচালান করে। এ ছাড়া ওই অঞ্চলে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও মানবপাচারের মাধ্যমেও অর্থ সংগ্রহ করে আইএস।

কাতারের দোহা সেন্টারের ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের ভিজিটিং ফেলো লুআই আল কাত্তেব বলেন, সাধারণভাবে ব্যারেলপ্রতি যে তেল ১০০ ডলারেরও বেশি অর্থে বিক্রি হয়; আইএসের জঙ্গিরা চোরাইপথে পাওয়া একই পরিমাণ তেল ২৫ থেকে ৬০ ডলারে বিক্রি করে। যেহেতু তারা চোরাকারবারির মাধ্যমে এই তেল সংগ্রহ করে, তাই যে দামেই তারা তা বিক্রি করুক না কেন, বেশ ভালো লাভ হয়। এভাবে তেল চোরাকারবারির মাধ্যমে সংগঠনটি প্রতিদিন ৩০ লাখ ডলারেরও বেশি আয় করে। তার মতে, ইরাক থেকে প্রাচীন মূল্যবান জিনিস চোরাইপথে তুরস্কে বিক্রি করেও আয় করে আইএস।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, আইএসের সম্পদের পরিমাণ জঙ্গিবাদের ইতিহাসে যেকোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর চেয়ে অনেক বেশি। ইউরোপও এই তেল কিনেছে বলে স্বীকার করেছে।তেলের উৎস থেকে জঙ্গিদের আয়ের এই পথটি বন্ধ করতে উদ্যোগ নিচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন।
 
আরেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার দাবি, নগদ অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে আইএস অন্য মাফিয়া চক্রের মতোই। তারা খুবই সুসংগঠিত, নিয়মতান্ত্রিক এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে সহিংসতায় পারঙ্গম। সংগঠনটি ইরাকের উত্তরাঞ্চলের মসুল শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ব্যাংকগুলো থেকে লাখ লাখ পরিমাণ নগদ অর্থ লুটে নিয়েছে।

অর্থ সংগ্রহের আরেকটি বড় জায়গা হচ্ছে বিদেশি কাউকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা। এ বছরের শুরুর দিকে চার ফরাসি এবং দুই স্প্যানিশ সাংবাদিককে অপহরণ করেছিল আইএস। তাদের সরকার মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দিয়ে তাদের মুক্ত করে। কিন্তু দুই মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফলি ও স্টিভেন সটলফের ক্ষেত্রে এমনটি না হওয়ায় তাদের শিরশ্ছেদ করা হয়।

একসময় আইএসের অর্থের মূল জোগানদাতা ছিলেন উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর ধনী দাতারা। তবে সংগঠনটির জঙ্গি তৎপরতার বিষয়টি বিশ্বব্যাপী আলোচিত হলে তাদের অনেকেই সহায়তা বন্ধ করে দেন। তখন সংগঠনটি তেলভিত্তিক আয়ের উৎস গড়ে তোলে। তবে এসব তেল স্থাপনায় বিমান হামলা চালানো হবে কি না, এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি মার্কিন কর্তৃপক্ষ। এসব তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ কাজ করেন, বিষয়টি বিবেচনা করেই চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *