Connect with us

জাতীয়

জিকা ভাইরাসের শঙ্কা মুক্ত বাংলাদেশে

Published

on

জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেও এ ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশে শঙ্কার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, জিকা ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশের ভয়ের কিছু নেই। সতর্কতা অবলম্বন করলেই এ ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। খবর বাসসের।

জিকা ভাইরাস ডেঙ্গুর মতো একধরনের জ্বর। লক্ষণ হিসেবে শরীরে জ্বর থাকে, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকে। বিশেষ করে হাত এবং পায়ের জয়েন্টে বেশি ব্যথা হয়। গায়ে ফুসকুড়ি থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে তারা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

জানা গেছে, ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটেছে এমন কোনো রোগীকে এডিস মশা কামড়ানোর মধ্যে দিয়ে এটি স্থানান্তরিত হয়। পরে ওই মশা অন্যদের কামড় দিলে তা ছড়াতে থাকে। তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক যে তথ্যটি উঠে এসেছে তা হলো গর্ভবতী মায়েরা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশুটি মাইক্রোসেফালি বা ছোট আকৃতির মাথা ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্রেইন নিয়ে ভূমিষ্ঠ হতে পারে। জিকা ভাইরাস প্রথম আফ্রিকাতে শনাক্ত হয় বানরের শরীর থেকে। কিন্তু কখনও সেটি মহামারি আকারে ছড়ায়নি। তবে, নতুন করে গত বছরের মাঝামাঝি ব্রাজিলে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এরইমধ্যে ব্রাজিলসহ আশেপাশের ২৩টি দেশে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। জিকার কোনো প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি।

জিকা নিয়ে ভয়ের কিছু আছে কি না জানতে চাইলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইডিসিআর) পরিচালক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, এটি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। তবে, সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আফ্রিকায় এটি এই সময়ের একটি বড় সমস্যা। যেসব নারী গর্ভবতী হতে চান, তাদের সাবধান থাকতে হবে। যদি বাংলাদেশ থেকে ওখানে কেউ যান এবং গর্ভবতী হন, তাহলেই কেবল আতঙ্কের বিষয় আছে।

তিনি বলেন, পুরুষ কিংবা স্বাভাবিক নারীদের ক্ষেত্রে জিকার কোনো সমস্যা নেই। এতে মৃত্যু খুবই কম। এটি এডিস মশাবাহিত এবং লক্ষণগুলো আমাদের দেশের ডেঙ্গুর মতো। তবে, মোটেও ডেঙ্গর মতো সিরিয়াস নয়। সমস্যা হলো, গর্ভবতী নারীর বাচ্চার ক্ষেত্রে। বাংলাদেশ একেবারেই মুক্ত জিকা থেকে। তবে কোনো নারী যদি আফ্রিকা থেকে গর্ভবতী হয়ে আসেন, তাহলেই কেবল তার ক্ষেত্রে ভয় আছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) সামিউল ইসলাম সাদী বলেন, জিকা ভাইরাস তো এখনো নেই বাংলাদেশে। এডিস মশা তো আছেই। বিষয়টা এমন যে, ওইসব এলাকায় যারা ভ্রমণ করছেন, তাদেরই এই আশঙ্কা রয়েছে। তবু সর্তকতার একটা বিষয় রয়েছে। আমাদের প্রস্তুতি এবং ব্যবস্থাপনা রয়েছে সম্পূর্ণ, ভয়ের কিছু নেই।

আমেরিকার ২৩টি দেশে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার তথ্য দিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। মাইক্রোসেফালিতে (অস্বাভাবিক আকৃতির মাথা নিয়ে জন্ম নেওয়া) আক্রান্ত শিশুদের জন্মের হার বাড়তে থাকায় নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে ভাইরাসটি মোকাবেলায় ডব্লিউএইচও একটি জরুরি টিম গঠন করেছে। সংস্থার হিসেবে, এ বছরের শেষ নাগাদ জিকা ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হতে পারে ৪০ লাখ মানুষ।

ডব্লিওএইচও’র মহাপরিচালক ড. মার্গারেট চ্যান বলেছেন, জিকা ভাইরাস দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে এবং এর প্রভাবটাও অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। ২৩ টি দেশসহ আরও বেশ কয়েকটি অঞ্চলে জিকা এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এর বিরুদ্ধে দ্রুতই কিছু করা প্রয়োজন।

প্যারাসাইটোলজি (নিপসম) ও মাইক্রোবায়োলজি বিশেষজ্ঞ পরিচালক অধ্যাপক বেনজির আহমেদ বলেন, ভাইরাসটি বাংলাদেশে প্রবেশের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম। কারণ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ খুব বেশি নেই।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *