দেশজুড়ে
হাতীবান্ধায় বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর ভোটার তালিকা ভূক্তির কাজ শুরু
হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট)সংবাদাতা: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলাসহ দেশের ১১১টি বিলুপ্ত ছিটমহলের নাগরিকদের ভোটার তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্তির কাজ শুরু হয়েছে। রোববার সকালে উপজেলার উত্তর গোতামারীর বিলুপ্ত ছিটমহলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মমিনুর আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গণনাকারী সুপার ভাইজার সেকেন্দার আলী, তথ্য সংগ্রহকারী আঃ ওহাব ও সুশান্ত চন্দ্র, গোতামারী ডিএনএসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহম্মেদ হোসেন রঞ্জু, নাগরিক অধিকার কমিটির জেলা সম্পাদক আজিজুল হক ও ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান প্রমুখ। জীবনে প্রথম ভোটার তালিকায় নাম তালিকাভূক্ত করতে পারার অনুভূতি ব্যক্ত করতে এসে ষাটর্ধো বয়সী বৃদ্ধা আছিয়া বেগম বলেন, বাহে ভোটার হওয়ার পাওয়ায় জীবনে একটি তৃপ্তি পানুং। ছিটমহলে থাকা অবস্থায় কখনো চিন্তাও করং নাই যে ভোট দিবার পাইম। সে আশা বর্তমানে পূরনের পথে। ভোটার তালিকায় নাম যখন হইছে বাচি থাকলে ভোট দিবার পাইম। একই অনুভূতি ব্যক্ত করলেন, গোতামারী বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দা মৃতঃ মাহাবুল আলমের স্ত্রী হাজরা বেগম (৬১), নতুন ভোটার হওয়ায় মহাখুশি আনছারের পুত্র আবুল কাশেম (২২), আবুল হোসেনের পুত্র মফিজুল হক (৩১) উপজেলা নির্বাচন অফিসার মমিনুর আলম বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য ফরম পুরন ১০ জুলাই শুরু হয়ে চলবে ১৬ জুলাই পর্যন্ত। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ছবি তোলা ও রেজিষ্ট্রেশনের কার্যক্রম ১৭ জুলাই শুরু হয়ে চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ১ আগস্ট, খসড়া ভোটার তালিকা সংশোধন করা হবে ২৮ জুলাই এবং চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ৪ সেপ্টেম্বর। নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা আইন ২০০৯ এর ২১ ধারার বিধান অনুযায়ী ১১১টি ছিটমহলের ৩৭ হাজার ৫শত ৩৫ জন অধিবাসী মধ্যে ভোটার হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের ভোটার তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্তি করার প্রজ্ঞাপন জারী করা হয়। এ প্রজ্ঞাপনের আলোকে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাচন অফিস উপজেলার ১৩৫ ও ১৩৬ নং উত্তর গোতামারী ছিটমহলে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকার কাজ শুরু করে।
এর ফলে বিলুপ্ত ছিটমহলের নাগরিকেরা তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র পাবেন। জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরির সকল কাজ সম্পন্ন হলে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর প্রত্যেক নাগরিক তাদের হাতে পাবেন প্রয়োজনীয় এই কার্ডটি। ফলে দীর্ঘদিন থেকে ঝুলে থাকা নাগরিকত্বের জন্য অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো তাদের।
ছিটমহল সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের এক বছর অতিক্রম হয়ে গেলেও নাগরিকত্ব অর্জনের জাতীয় পরিচয় পত্র লাভ করেনি লালমনিরহাটের বিলুপ্ত ৫৯টি সহ বাংলাদেশের ১১১টি ছিটমহলের নাগরিকগন।
ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি,চাকুরীতে আবেদন.জন্ম সনদ এমনকি মোবাইল সীম নিবন্ধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলো করতে পারছিলেননা বিলুপ্ত ছিটমহলের প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ।(৩৭,৫৩৫জন)।এ কারণে সরকারী ও বেসরকারী নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল তারা। এ প্রসঙ্গে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু বলেন, ছিটমহল বিনিময়ের কাজ শেষ হওয়ার পর সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব ও বরাদ্দ দেয় বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে। এরই ধারাবাহিকতায় ছিটমহল বাসীর নাগরিক সুবিধা অর্জনের লক্ষ্যে শুরু হলো ভোটার তালিকা গণনা কাজ। এ কাজ সুষ্ঠু ও শৃংঙ্খলভাবে পরিচালনায় উপজেলা পরিষদ সার্বিক সহযোগিতা করবেন।