জাতীয়
মহাসড়কে তীব্র যানজট, ভোগান্তির শিকার ঘরমুখো মানুষ
স্টাফ রিপোর্টার : ঈদের ছুটিতে ঘরমুখো মানুষ শেষ মুহূর্তে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যানজটে নাকাল হচ্ছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের গাড়িগুলো যানজটে পড়ে ধুকেধুকে চলছে। ঈদের আনন্দ ম্লান হচ্ছে পথের ক্লান্তিতে।
ঈদের ছুটি শুক্রবার থেকে শুরু হওয়ায় অনেকে সময়ের স্বল্পতার কারণে আজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন এবং হচ্ছেন। কিন্তু রাজধানী থেকে বের হতেই তাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে যারা বাড়ি ফিরছেন, তাদের কষ্ট-ক্লান্তির শেষ নেই। ব্যাগ-ব্যাগেজ হাতে এসব মানুষ বৃষ্টি ও কাদাপানিতে নাকাল হয়ে পড়ছেন। ঘরে ফেরার যুদ্ধে ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে আসছে।
জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার নাটিয়াপাড়া পর্যন্ত ৫০ কি. মি. মহাসড়ক জুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত আটটার পর থেকে এ মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় ঈদে ঘরমুখো মানুষের অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এক দিকে বৃষ্টি অপর দিকে মহাসড়কে যানজট হওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
শুক্রবার মহসড়কের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ভয়াবহ যানজট। গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসি মো. হুমায়ূন কবীর জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় যানজটের সূত্রপাত হয়। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের ২২টি জেলার এবং টাঙ্গাইল, জামালপুর ও শেরপুর জেলার যানবাহন ২০-৩০ গুণ বেড়ে যাওয়ায় যানজট নিরসনের জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলগামী যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় যানজট তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে। টাঙ্গাইল থেকে রাজধানী ঢাকা যাওয়ার দেড় ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে যাত্রীদের ১০-১৫ ঘণ্টা লাগছে বলে অভিযোগ করেছে। চন্দ্রা, কালিয়াকৈর, বোর্ডঘর, স্কয়ার, ক্যাডেট কলেজ, গোড়াই, ধেরুয়া, দেওহাটা, মির্জাপুর বাইপাস, কুরনী, কদিমধল্যা, পাকুল্যা, নাটিয়াপাড়া ও করটিয়া বাইপাস পর্যন্ত এই ৫০ কি. মি. এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাইন উদ্দিন মাইন বলেন, যানজট নিরসনের জন্য টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, আনসার বাহিনী, র্যাব, আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ন, কমিউনিটি পুলিশসহ পুলিশের প্রায় ৫শতাধিক সদস্য যানজট নিরসনের জন্য দিন রাত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রামমান ম্যাজিস্ট্রেট টিম কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে শুক্রবার থেকেই। যাওয়ায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট দুই কিলোমিটার থেকে তিন কিলোমিটার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এতে ঘরমুখো মানুষদের বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ঈদের আগের দিন হওয়ায় সব মানুষ বাড়ি যাচ্ছে। সকাল থেকেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রচুর যানবাহনের চাপ পড়েছে। তাছাড়া মহাসড়কে বেশ কিছু অন্য সড়কের গাড়ি প্রবেশ করেছে। ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো কোথাও কোথাও বিকল হয়ে পড়ে থাকায় মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে ধীর গতি দেখা গেছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ম্যানেজার (বাণিজ্য) সালাউদ্দিন জানান, ঈদের আগের দিন ঘাটে চাপ থাকে। বর্তমানে পাটুরিয়া ঘাটে প্রায় তিন কিলোমিটারের মত যানজট রয়েছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মত পর্যাপ্ত ফেরি পাটুরিয়া ঘাটে রয়েছে। এতে করে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হবে না।