দেশজুড়ে
রংপুরে ৩ টুকরো লাশের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ
রংপুর : রংপুর মহানগরীর দেওয়ানবাড়ি-গোমস্তাপাড়া রোডের ব্রীজের নিচ থেকে গত ৪ জুলাই দুপুরে অজ্ঞাত ব্যক্তির ৩ টুকরা লাশের সন্ধান মেলে। নির্মম এই হত্যা কান্ডের রহস্য উদ্ধার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। লাশটি ছিল নিউজুম্মাপাড়া নিবাসী ডিস ক্যাবলের লাইন ম্যান সোহেলের।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার কৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে লোমহর্ষক কাহিনি বেরিয়ে এসেছে। এই কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিলো ৫ জন। সোহেলকে মেঝেতে শুইয়ে দিয়ে প্রথমেই শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে দেয় হত্যাকান্ডের মূলহোতা আশরাফুল আলম ওরফে বুড়া।
এরপর গলার নীচ থেকে কোমর পর্যন্ত একটি অংশ কাটে আসাদ ও ঠান্ডা রুবেল। আর এসব কাজে সহযোগিতা করে সুবাশ ও তার বড় ভাই পিন্টু। রংপুরের আলোচিত সোহেল হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত আসাদকে শনিবার রাতে গ্রেফতারের পর তার দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। আসাদ নগরীর জুম্মাপাড়া এলাকার হাসান আলীর ছেলে। আসাদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-এ) হুমাযুন কবীর জানান, গত বুধবার (১ জুলাই) দুপুর ১২ টার দিকে সদর হাসপাতালের পেছনে মারুয়াপট্টি এলাকার সুবাশ ও পিন্টুর বাড়িতে এ হত্যাকান্ডটি ঘটে। সোহেলকে হত্যার পর তার লাশ বস্তাবন্দী করে ঘরেই রাখা হয়। পরে রাত ৩ টার দিকে পাশেই শ্যামাসুন্দরী খালের মধ্যে মাথা এক জায়গায় ও শরীরের বাকি দুই অংশ দুই বস্তায় বন্দী করে অন্য জায়গায় ফেলে দেয় কিলাররা।
শনিবার দুপুরে সুবাশ ও মিলনকে আটকের পর তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী প্রথমে মাথাবিহীন বস্তাবন্দী লাশ এবং পরে সন্ধ্যার দিকে মাথার অংশটি উদ্ধার করেন পুলিশ।
অপরদিকে, ওই দিন রাত ১২ টার দিকে কোতয়ালী থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে শহরের সালেক মার্কেটের দ্বিতীয় তলা থেকে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া আসাদকে গ্রেফতার করে। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে এসব অভিযানে অংশ নেন থানার উপ-পরিদর্শক হারেস সিকদার, এরশাদ আলী, হোসেন আলী, সাইফুর ইসলাম ও রেজাউল ইসলামসহ সঙ্গীয় ফোর্স।
সহকারী পুলিশ সুপার আরও জানান, নিহত সোহেলের আপন চাচাতো বোনের স্বামী হলেন আশরাফুল আলম বুড়া। বেশ কিছুদিন ধরে সোহেল ও বুড়ার মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। মূলত পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণেই সোহেলকে খুন করা হয় বলে আসাদ পুলিশকে জানিয়েছে।
বুড়াকে গ্রেফতার করতে পারলে পারিবারিক দ্বন্দ্বের বিষয়টিও জানা যাবে বলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান। কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী জানান, কিলিং মিশনে অংশ নেয়া বুড়া, আসাদ, ঠান্ডা রুবেল ও নিহত সোহেল একই ছিনতাই দলের সদস্য। তাদের সকলের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার মূলহোতা বুড়াসহ অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছেন বলেও ওসি জানান।