Connect with us

ঠাকুরগাঁও

রাণীশংকৈল উপজেলা কমান্ডারের বিরুদ্ধে বিচার না পেয়ে ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা

Published

on

SAMSUNG CAMERA PICTURESরাণীশংকৈল প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত কাজ অজ্ঞাত কারনে হচ্ছেনা বলে দাবি তুলেছেন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাগণ। ২০১৪ সালের শেষ দিকে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বরাবরে পাঠানো হয়। ২০১৫ সালের ২ মার্চ অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত কাজ সম্পাদনের জন্য তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলামের বরাবরে প্রেরণ করা হয়। যাহার স্মারক নং ১৫০০ ছিল। অজ্ঞাত কারনে তদন্ত কাজ ধামাচাপা দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালনকালে রাণীশংকৈল ডিগ্রী কলেজ শহীদ মিনার চত্বরে মুক্তিযোদ্ধাগণ কমান্ডারের বিরুদ্ধে সূবিচারের দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ঠাকুরগাও-৩ আসনের সাংসদ অধ্যাপক মো. ইয়াসিন আলী, ৩০১ সাংসদ মোছাঃ সেলিনা জাহান লিটা, ইউএনও খন্দকার নাহিদ হাসানসহ সুধিমহল বিষয়টি নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি খন্দকার নাহিদ হাসানের স্বরণাপন্ন হন মুক্তিযোদ্ধাগণ। বিষয়টি নিরসনের জন্য ১৬ এপ্রিল নিজ কার্য্যালয়ে আলোচনায় বসার কথা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। নির্ধারিত সময়ে মুক্তিযোদ্ধা ও বিরঙ্গনাগণ হাজির হন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অসুস্থতার অজুহাতে গা ঢাকা দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজ্ঞাত কারনে বসার বিষয়টি এড়িয়ে যান। ক্ষোভে ফেটে পড়ে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ও বিরঙ্গণারা।
অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, বর্তমান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ সিরাজুল ইসলাম যুদ্ধকালীন সময়ে ১৩ বছরের শিশু ছিল। ১২ এপ্রিল ১৯৭১ সালে সে ভারতের শিলিগুড়ি পাহাড়ে অবস্থান নিয়ে জঙ্গল পরিস্কার করে ৪৫ দিনের ট্রেনিং গ্রহণ শেষে হিন্দিভাষা বাংলায় তরজমা করে মুক্তিযোদ্ধাদের শিখাতেন বলে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার দাবি করেছেন। পঞ্চগড়, ঠাকুরগাও, বালিয়াডাঙ্গীর সীমান্তবর্তী এলাকা হরিনমারি সহ বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি। ২৭ এপ্রিল নফিজ আলী মাষ্টার, ছাত্র মুনসুর আলী, মহেন্দ্র রায়কে কিভাবে স্বচক্ষে হত্যা করতে দেখেছিলেন। তিনি ৮০ জনের দলে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এফ,এফ নম্বর-২০০৩ ও গ্রæপ নম্বর-৫২ উল্লেখ করেছেন। ১৭ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে যাচাই বাছাই ফরমে তিনি উল্লেখ করেছিলেন তাহার এফ, এফ নম্বর-২০০৬ গ্রæপ নম্বর ১০৭।
যুদ্ধকালীন কমান্ডার মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১৩ বছরের কোন শিশুকে ভারতের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ভর্তি করা হতো না। সেখানে ৪৫ দিনের কোন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি, ২৯/৩০ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। মালন বাহারাইল ইউথ ক্যাম্পে ভর্তি হয়ে ৪৫ দিনের ট্রেনিং গ্রহণ করে ২৭ এপ্রিল ১৯৭১ রাণীশংকৈলের হত্যাকান্ড কিভাবে স্বচক্ষে দেখলেন। পঞ্চগড়, ঠাকুরগাও, বালিয়াডাঙ্গীর বিভিন্ন সেক্টরে তিনি যুদ্ধ পরিচালনার কথা বলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জাতিকে ধোকা দিয়েছেন। যুদ্ধকালীন সময়ে এত জায়গায় মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন কিভাবে ? ২০০৬ সাল থেকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব গ্রহণ করা অব্দি লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে কোন প্রকার হিসাব দিচ্ছেন না। তিনি অনেককে মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকায় অন্তভর্‚ক্তি, মুক্তিযোদ্ধার ভাতা চালু, বিরঙ্গণাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা করে দেয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেককে বিরঙ্গণার তালিকাভুক্ত করার নামে খরচের অজুহাতে টাকা হাতিয়েছেন। ট্রেনিং ক্যাম্পে ৮০ জনের দলে ৫২ নম্বর গ্রæপে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে এফ,এফ নম্বর ২০০৩, ১৭ ডিসেম্বর ২০০০ তারিখের যাচাই বাছাই ফরমের উল্লেখিত এফ,এফ নম্বর ২০০৬ সেটি ঠাকুরগাওয়ের রুহিয়ার মরহুম মুক্তিযোদ্ধা শাসমুল হকের যা তদন্তে সত্যতার প্রমান মিলবে। বর্তমান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সিরাজুল ইসলাম এফ,এফ নম্বরটি অবৈধভাবে ব্যবহার করে আসছে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ৪ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকার কোন হিসাব অদ্যাবধি না দিয়ে টাল বাহানা করে আসছেন তিনি।
১৬ এপ্রিল শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মো. নাহিদ হাসানের কার্য্যালয় থেকে রেবিয়ে এসে নায্য বিচারের দাবিতে উপজেলার বিরঙ্গণা ও মুক্তিযোদ্ধাগণ ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান বলেন, বিষয়টি নিরসনের জন্য আমি উদ্যোগ নিয়েছি কিভাবে তা নিরসন করা যায়। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্যা নিরসনের ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *