Connect with us

জাতীয়

শান্ত-স্নিগ্ধ এদেশ, তাই প্রকৃতি তাদেরকে স্থায়ী হতে দেবে না

Published

on

আতাহার হোসাইন:

রাজনৈতিক সমস্যায় যখন দেশের মানুষের মন থেকে শান্তি তিরোহিত হয়েছে, ঘরে বাইরে যখন মানুষের অর্থনৈতিক সমস্যা প্রকট, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ সকল শ্রেণির মানুষের মনে যখন উৎকণ্ঠা প্রবলভাবে স্থায়ী রূপ নিয়েছে, পেট্রলবোমা যখন কেড়ে নিচ্ছে জীবন্ত মানুষের প্রাণ, দুঃশাসন কিংবা প্রতিবাদের নামে যখন কার্যত দেশ স্থবির তখনও কিন্তু প্রকৃতির দিকে তাকালে মনে হয় প্রকৃতিকে তার কিছুই ছুঁতে পারেনি। ঠিকই বসন্ত এসেছে নির্ধারিত সময়ে। আমের গাছে ঠিকই ধরেছে মুকুল। সাদা সাদা সাজনা ফুল ঠিকই ধরেছে গাছে। অপ্রয়োজনীয় ফুলগুলোও ঝরে পড়েছে। ছোট ছোট সাজনাগুলো ঝুলে আছে ডালে। কচি ধান ক্ষেতে ঠিকই দোলা দিয়ে যাচ্ছে মৃদু সমীরণ।
এই দুঃসময়েও গভীর রাতে ঠিকই বৃষ্টি হয়েছে। ঠিক যখন দরকার ছিল তখনই ফসলের জন্য তা বয়ে নিয়ে এসেছে মঙ্গলবার্তা। রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে আশা করার মতো কিছু এখনও দেখা যায়নি। কিন্তু তবুও আশা জাগে একদিন এই দেশ ঘুরে দাঁড়াবে। পুরনো ক্ষতকে পেছনে ফেলে দেশ এগিয়ে যাবে। অন্তত প্রকৃতিকে দেখে তাই মনে হয়। ঘৃণিত এই রাজনীতি একদিন দূর হবেই। এ দেশের মানুষ, এদেশের প্রকৃতির সাথে পেট্রলবোমা আর পোড়া লাশ মানায় না। কালের করাল গ্রাসে কিছু মানুষের হাত ধরে এদেশে প্রবেশ করে এই সহিংসতা। কিন্তু সময়ের আবর্তে তা হারিয়ে যেতে বাধ্য। প্রকৃতি একে দীর্ঘস্থায়ী হতে দেবে না নিশ্চয়। এটা আমাদের বিশ্বাস। আপাতত কোন লক্ষণ দেখা না গেলেও এই বিশ্বাস আমাদের বাঁচিয়ে রাখছে প্রতিনিয়ত, আমাদের বেঁচে থাকার অণুপ্রেরণা যুগিয়ে যাচ্ছে। কামনা করি ঋতুর পরিবর্তনের সাথে সাথে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার হয়ে যাক এই জঞ্জালগুলো।
ওরা এদেশের নয়, এদেশের প্রকৃতিতে তারা বেমানান। এদেশ শান্ত সুশীতল বাতাসের দেশ। এদেশ ধীরলয়ে বয়ে চলা নদীর দেশ। এদেশ জ্যোৎস্নার দেশ। শিয়ালের হুক্কা-হুয়ার দেশ। এখানে পেট্রলবোমার আগুন প্রকৃতি বিরুদ্ধ। এখানে সবুজের সমারোহ, এখানে কুকিলের কুহু কুহু সুরটাই যায়। এখানে রুক্ষতা নয়, এখানে অমানুষেরা কখনোই স্থায়ী আসন গেড়ে নিতে পারবে না। নিশ্চয় এদেশের মানুষ তাদেরকে বিদায় করতে সক্ষম হবে। নিশ্চয় তারা সক্ষম বিদেশে বাড়ি-গাড়ি কেনা, সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার করা মানুষগুলোকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে। এই বিশ্বাস আছে বলেই এদেশকে এখনো ভালোবাসি। নিশ্চয় এদেশের মানুষ একদিন গর্জে উঠবে। মসনদ রক্ষা আর মসনদ দখলের লড়াইকে স্তব্ধ করে দেবে। শ্বাসমূলের মতো জাগ্রত হবে নতুন চেতনা। পুরনো একঘেয়ে চেতনা স্থান পাবে আঁস্তাকুড়ে। জয় হোক এদেশের মানুষের, এদেশের প্রকৃতি ধরে রাখুক তার আপন স্বভাব। দোয়েল শিষ দিয়ে যাক এভাবেই এই ভোরের মৃদুমন্দ আবহাওয়ায়। কেউ যেন তাদের থামাতে না পারে। কোনদিনও না।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *