দেশজুড়ে
শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর বন্ধের পথেভারতীয় পরিবেশ আদালতে নিষেধাজ্ঞা
নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি:
শেরপুরের নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও স্থলবন্দরের কার্যক্রম এখন প্রায় বন্ধের পথে। ভারতীয় পরিবেশবাদীদের দায়ের করা মামলায় বন্ধ রয়েছে ভারতীয় খনিতে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম। এতে সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। আর আমদানি-রফতানিকারকরা পড়েছে লোকসানের মুখে।
ব্যবসায়ী ও স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের আমদানি-রফতানিকারীদের প্রতিবছর নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ব্যবসার মোক্ষম সময়। এ সময় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ঢালু থেকে উত্তোলিত ৮০ থেকে ৯০ হাজার মেট্রিক টন খনিজ কয়লা আমদানি ও রফতানি করে থাকেন। পাশাপাশি কয়েক হাজার মেট্রিক টন বোল্ডার পাথরও আমদানি করা হয়। বছরের বাকি সময় বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এ বন্দরে দেড় হাজার নিয়মিত ও প্রায় ৩ হাজার অনিয়মিত শ্রমিক কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। এতে প্রতি বছর ব্যবসায়ীরাও লাভবান হন আর সরকারও পায় প্রায় ১৬ থেকে ২০ কোটি টাকার রাজস্ব। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম দিকে রেট হোল পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করায় ভারতের একটি পরিবেশবাদী সংগঠন শিলংএ অবস্থিত ভারতীয় পরিবেশ আদালত ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালে (এনজিটি) কয়লা উত্তোলন বন্ধে একটি রিট দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে ভারতের পরিবেশ বিষয়ক ওই আদালত অস্থায়ীভাবে খনি থেকে কয়লা উত্তোলন ও স্থানান্তর করার বন্ধের নির্দেশ দেন। এছাড়াও আগে থেকে উত্তোলিত ১৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা রফতানি বা স্থানান্তরের ক্ষেত্রেও শর্ত জুড়ে দেন।
জানা গেছে, শর্তের মধ্যে ছিল ভারতীয় কয়লা রফতানিকারক ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সরকারের সমুদয় রয়েলিটি পরিশোধ করা ও উত্তোলিত অনলাইন ওয়েব্রিজের মাধ্যমে রফতানি তথা স্থানান্তর করা। এরপর ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সরকারের রয়েলিটি যথাযথভাবে পরিশোধ করলেও নাকুগাঁও বন্দরের অপজিটে ভারতীয় ডালুতে অনলাইন ওয়েব্রিজ না থাকায় আদালতের এই শর্ত ভারতীয় ব্যবসায়ীরা পূরণ করতে পারছেন না। ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এলসি করার পরও উত্তোলিত কয়লা ভারতীয় ব্যবসায়ীরা রফতানি করতে পারছেন না।
এদিকে অল্প পরিমাণে বোল্ডার পাথর আমদানি করা হলেও ভারতে নতুন করে আর পাথর উত্তোলন করা যাচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো জানিয়েছেন। এতে করে যে কোন মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে পাথর আমদানিও। আরো জানা গেছে, আগামী ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি শিলং এর আদালতে এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে শুনানির কথা রয়েছে। শুনানিতে যদি কয়লা উত্তোলনের অনুমতি মিলে তবে নাকুগাঁও স্থলবন্দরে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে আবার। লাভবান হবে সংশ্লিষ্ট সবাই। অন্যথায় এই বন্দরটি অচল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।