ঝিনাইদহ
শৈলকুপায় ৭০ বছর বয়সে বিয়ে করায় ঘর ছাড়তে হলো বাবাকে
মনিরুজ্জামান সুমন, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
শেষ বয়সে বিয়ে করায় বাবা-মা’কে সংসার থেকে বিতাড়িত করলো ছেলেরা। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপার কবিরপুর গ্রামে। ৭০ বছর বয়সী এক দম্পতি যুগলের গত ২৬ মে রাতে ধুমধাম বিয়ে সম্পন্ন হয়। বৃদ্ধ লোকটির দেখা শোনা করার লোক না থাকায় এলাকার কতিপয় যুবকেরা স্বেচ্ছায় বাড়ী বাড়ী ঘুরে টাকা ও চাউল আদায় করে আনুষ্ঠানিকভাবে ধুমধাম করে তাদের বিয়ের আয়োজন করে।
এদিকে বিয়ের দু’দিন যেতে না যেতেই বৃদ্ধ আজিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী আমেনা খাতুনকে সংসার থেকে বিতাড়িত করেছে তার ছেলেরা। বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ লোকটি কবিরপুর চাতাল পাড়ার নিজের হাতে তৈরী বসতবাড়ী ছেড়ে স্ত্রী আমেনাকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী মছিরন নেছার বাড়ীতে ভাড়াটিয়া হয়ে উঠেছেন।
স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধ লোকটি শেষ বয়সে বিয়ে করায় তার ছেলে বজলু, নজির, কাশেম ও রওশন মিলে স্ত্রীসহ তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। নতুন বউকে নিয়ে রাস্তায় মেনে অ আসে এই দম্পত্তি। পরে পার্শ্ববর্তী মছিরন নেছার বাড়ীতে ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেছেন।
বৃদ্ধ আজিম উদ্দিন জানান, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকেই দীর্ঘদিন সে একা বসবাস করতেন। ছেলেরা দেখা শোনা না করায় তিনি নতুন করে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ে করার অপরাধে ছেলেরা তাকে ও তার নতুন স্ত্রীকে বাড়ী থেকে জবরদস্তী বের করে দিয়েছে। বর্তমানে তিনি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। ছোট্ট একটি কামরায় ভাড়া থাকেন, মাসিক ভাড়া ৩ শত টাকা। উপার্জন করার মত শারিরিক ক্ষমতা না থাকলেও জীবিকার তাগিদে হাবিবপুর মসজিদে মোয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাউল তুলে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। অসুস্থ্য হলে সেবা করার লোক মিললেও মিলছে না ঔষুধ কেনার টাকা। খুবই নাজেহাল পরিস্থিতিতে কাটছে তাদের দাম্পত্ত জীবন। শত কষ্টের মাঝেও নতুন স্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে শেষ বয়সে নিরবেই সব সহ্য করছেন তিনি। রান্না-বান্না, ঘর ঝাড়– দেওয়া, থালা বাসন পরিস্কারসহ সংসারের যাবতীয় কাজে নতুন স্ত্রীকে সহযোগিতা করছেন তিনি।