দেশজুড়ে
সৈয়দপুরে ইজিবাইকের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বেড়েই চলেছে
ইজিবাইকের ভাড়া সাশ্রয়ী নিরাপদ ও আরামদায়ক যাতায়াতে যাত্রীরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অপরদিকে তেল, গ্যাস ও মবিলের ঝামেলা না থাকায় এসব ইজিবাইকের মালিকরাও লাভবান হচ্ছেন। এলাকার শ্রমিক শ্রেণিসহ বেকার যুবকরা এ ইজিবাইক চালিয়ে দৈনিক ৩ থেকে ৫শ’ টাকা রোজগার করে সাংসারিক স্বচ্ছছলতা এনেছে এবং আয়ের পথ হয়েছে সুগম। চীনের তৈরি রিজার্চেবল ইজিবাইক বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে। মাত্র বছর খানেকের ব্যবধানে এলাকার অলিগলিতে চলছে প্রায় ১ হাজারের উপরে অটোরিকশা।
শব্দ ও ধোঁয়াবিহীন এসব যান সব বয়সীর জন্য উপযোগী বিধায় অনেকে পারিবারিক ভ্রমনে রিজার্ভ নিয়ে যাতায়াত করছেন। গরিবের কাছে এটি প্রাইভেট কার হিসেবে বিবেচিত। এই যান এখানে স্কুল কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এক নম্বর পছন্দের তালিকায় রয়েছে। সৈয়দপুরে ব্যক্তি মালিকানায় ও এনজিও’র ঋনের মাধ্যমে এসব ইজিবাইক বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল বুধবার রাতে সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখা গেছে, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সির এক গান বেজে চলেছে একটি ইজিবাইকে। মোবাইলের মেরোরি কার্ডের মাধ্যমে সাউন্ড বক্সে গান শুনে চালকের আসনে বসে তরুণ সোহাগ ইজিবাইক নিয়ে ছুটছেন শহরের এক মাথা থেকে আরেক মাথায়। সোহাগের ইজিবাইকে রয়েছে আলোকসজ্জা।
সোহাগের ভাষ্যে, ইজিবাইক এখন গরিবের প্রাইভেটকার। নিম্নবিত্ত বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের সহজ বাহন। শুধু টানা বা ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে কম ভাড়ায় বা দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছার জন্যই নয়, নিম্নবিত্ত পরিবারের বিয়েতেও এখন প্রাইভেটকারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এ বাহন। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির তরুণ-যুবকদের অর্থনৈতিক সফলতা অর্জনেও ভূমিকা রাখছে এ গণবাহন।
সৈয়দপুর শহরের ইজিবাইক চালকরা জানান, প্রতিদিন তারা ৭/৮শ’ টাকা আয় করতে পারছেন। গাড়ির জমা বাবদ ৪শ’ টাকা দেয়ার পর তাদের রোজগার হচ্ছে ৩/৪শ’ টাকা। ফলে এলাকার অনেক বেকার যুবকসহ তাদের কর্মসংস্থানের নতুন একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। অনেকে আবার ব্যাংক ঋন ও ডিলারদের কাছ থেকে কিস্তিতে কিনে অটোরিকশার মালিক হয়েও চালাচ্ছেন। তখন দৈনিক রোজগারের পুরো টাকাটাই থেকে যাচ্ছে। কারণ বৈদ্যুতিক রিচার্জ ছাড়া এ অটোরিকশায় আর কোন খরচ নেই।
যাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই, তাদের জন্য শোরুম ও গ্যারেজগুলোতে রয়েছে ব্যাটারী রিচার্জের ব্যবস্থা। ৮/৯ ঘন্টা রিচার্জ করলে ১২০ কিঃমিঃ পর্যন্ত চলাচল করতে পারে অটোরিকশা। এক্ষেত্রে রিচার্জের জন্য দিতে হয় মাত্র ১৫ থেকে ২০ টাকা। রিচার্জেবল এসব অটোরিকশা বিক্রির জন্য সৈয়দপুরে ১০টির মতোডিলার রয়েছে। তারা বিভিন্ন নামে এসব ইজিবাইকের বাজারে ছাড়ছে। এসব ইজিবাইক শহরে চলাচল করায় স্থানীয় রিকশা চালক ও মোটর মালিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। মাঝে- মধ্যে এই ক্ষোভ সংঘাতে রুপ নিচ্ছে। বিডিপত্র/আমিরুল