দিনাজপুর
হিলি সীমান্তে বিজিবি বিএসএফের মাঝে পতাকা বৈঠক
হিলি প্রতিনিধি: সীমান্তে হত্যা, নারী শিশু পাচার, চোরাচালান, মাদকপাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশসহ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের গুলশান, শোলাকিয়া, ও কল্যানপুরে জঙ্গি হামলার বিষয় নিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর মাঝে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টায় হিলি সীমান্তের বিজিবি হিলি চেকপোষ্ট ক্যাম্পের গোলঘরে দুবাহিনীর মাঝে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত একটানা চলে।
এর আগে বিজিবির আমন্ত্রনে ভারতের পতিরাম ১৯৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আলকেশ সিং ও ৭৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এস কে শ্রী বাস্তব এর নেতৃত্বে বিএসএফের ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল হিলি সীমান্তের চেকপোষ্ট গেটের শুন্যরেখায় আসলে জয়পুরহাট-৩বিজিবি ব্যাটালিয়নের বিদায়ী অধিনায়ক লে.কর্নেল আব্দুল খবির সরকার, নবাগত অধিনায়ক লে.কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে তারা সীমান্ত অতিক্রম করে বিজিবি হিলি চেকপোষ্ট ক্যাম্পে আসেন এবং ক্যাম্পের গোলঘরে দুবাহিনীর মাঝে বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকে বিজিবির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, জয়পুরহাট-৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বিদায়ী অধিনায়ক লে.কর্নেল আব্দুল খবির সরকার, একই ব্যাটালিয়নের নবাগত অধিনায়ক লে.কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান, ব্যাটালিয়নের অপারেশন অফিসার মেজর এম আশরাফ আলী, হিলি সিপি ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার সিরাজুল ইসলাম, বাসুদেবপুর ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার রফিকুল ইসলাম, হিলি বিওপি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার ফজলুল হক, মংলা ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার আব্দুল হামিদ। বিএসএফের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পরিতাম-১৯৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আলকেশ সিং ও ৭৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এস কে শ্রী বাস্তব, সহ অধিনায়ক ডাবারা সিং, হিলি ক্যাম্প কমান্ডার কে এস রাথোর্ড, খাদ ডিবি।
জয়পুরহাট-৩বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আব্দুল খবির সরকার জানান, সীমান্তে হত্যা বন্ধে বিএসএফের পক্ষ থেকে বাংলাদেশীদের উপর কোন প্রকার গুলিবর্ষন না করা হয় বৈঠকে সে বিষয়ে তাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অনুরোধের জবাবে তারা জানায়, আক্রমণের শিকার না হলে গুলি চালাবে না ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
এছাড়া নারী শিশু পাচার, চোরাচালান রোধ, মাদকপাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশসহ সীমান্ত দিয়ে কোন প্রকার অবৈধ পারাপার না হতে পারে এ ব্যাপারে তারা যেন আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন সে জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সাথে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের গুলশান, শোলাকিয়া, ও কল্যানপুরের জঙ্গি হামলার ঘটনাটি নিয়েও আমাদের বন্ধু প্রতিম দেশ ভারতের সীমান্ত রক্ষি বাহিনীর সাথে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এব্যাপারে তাদের সাহায্যও কামনা করা হয়েছে, যাতে করে কোন দুস্কৃতিকারীরা নাশকতার জন্য অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে ভারত থেকে দেশে আসতে না পারে সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সহযোগীতা কামনা করা হয়। কোন বাহিনীর একার পক্ষে সীমান্ত রক্ষা করা সম্ভব নয় যদি প্রতিবেশীরা তাদের সহায়তা না করেন। একারনে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষি বাহিনীর মাঝে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক বিরাজমান রয়েছে তা ভবিষ্যতেও থাকবে। সেই সাথে আমার বদলি জনিত কারনে আমি অন্যত্র চলে যাচ্ছি। সেকারনে জয়পুরহাট ব্যাটালিয়নের নতুন অধিনায়ককে অপারের সীমান্ত রক্ষি বাহিনী বিএসএফের সাথে পরিচয় করে দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে বিএসএফের ভারতীয় প্রতিনিধি দলটি হিলি চেকপোষ্ট ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। এর পরে তারা একই পথ দিয়ে পুনরায় ভারতে চলে যান।