দেশজুড়ে
রংপুর পীরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙচুর; মিলছে না সুষ্ঠু সমাধান
জানা যায়, গত রবিবার দুপুরে স্কুলের সাবেক সভাপতি ও দাতা মোফাজ্জল হোসেন তার স্ত্রীসহ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের টিনশেড দুটি কক্ষ ও আধাপাকা একটি কক্ষে ভাঙচুর চালিয়ে ব্রেঞ্চ, চেয়ার-টেবিলসহ কিছু সরঞ্জামাদি লূট করে নিয়ে যান। ঘটনার সময় এলাকাবাসী ও স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন বলে জানান প্রধান শিক্ষিকা রনজিনা বেগম। ঘটনার পরে প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রনজিনা বেগম উপজেলা শিক্ষা অফিসে তাৎক্ষনিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
পরেরদিন সোমবার সকাল ১১ টায় বিদ্যালয় ভাঙচুরের বিচার দাবি ও পূন:নির্মানের দাবিতে স্কুলমাঠে মানববন্ধন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ।
রনজিনা বেগম জানান, এই স্কুলটি ১৯৯৯ সালে মোফাজ্জল হোসেনের দানকৃত ৩৩ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি তিনি ২০০২ সালে স্কুলের নামে উইল করে দেন। প্রথম থেকে মোফাজ্জল হোসেন স্কুলের সহকারি শিক্ষক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০০৭ সালে তাকে দীর্ঘদিন অনুপস্থিতি ও বয়সের কারনে শিক্ষকতা থেকে অবসর দেওয়া হয়। পরে ২০১০ সালে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে সর্বসম্মতিক্রমে তার পরিবর্তে ১০ নং শানেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. মেছবাহুর রহমানকে সভাপতি করা হয়। তারপর থেকে বিদ্যালয় ঠিকঠাক ভাবেই চলছিল। কিন্তু ২০১৩ সালের জাতীয় গেজেটে এই বিদ্যালয়টি সরকারী অন্তর্ভূক্ত করার পর থেকে তিনি বিদ্যালয়ে মোফাজ্জল হোসেনের মনোনীত একজন শিক্ষক নিয়োগ ও সভাপতি পদ ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ গত রবিবার তিনি তার স্ত্রীসহ কিছু সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে স্কুলে এ ঘটনা ঘটান। তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মেছবাহুর রহমান বলেন, স্কুলটির ভাঙচুর খুবই দু:খ জনক। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহŸান জানান তিনি।
এব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার রেজাউল করিম ঘটনার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমার কাছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ এসেছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রæত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোফাজ্জল হোসেনকে অবৈধভাবে ওই স্কুলের সভাপতি পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে তার স্ত্রী শাহানা বেগম তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, টিনশেড কক্ষ দুটি গাছ পরে ভেঙ্গে গেছে এবং সম্পূর্ণ স্কুলটি আমাদের দানকৃত ৩৩ শতক জমির বাইরে বর্তমানে আমাদের ভোগদখলকৃত জমিতে নির্মান করা হয়েছে। সেজন্য আমরা বাধা দিলে আমাদের নামে তারা এই মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।