Connect with us

নাটোর

চলনবিল অঞ্চলে বিনাচাষে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে রসুন চাষ

Published

on

জালাল উদ্দিন,গুরুদাসপুর,নাটোর: শস্য ভান্ডারখ্যাত দেশের বৃহত্তর চলনবিল জুড়ে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটার কাজ। উঁচু জমিগুলোতে চলছে বীজ বোপনের প্রস্তুতি। রসুন চাষকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলে পুরুষদের পাশাপাশি কৃষকবধূরা ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। এ অঞ্চলের নারীরা রসুন ভাঙ্গার কাজ করছেন। তারা প্রতি মন রসুন ভাঙ্গার মুজুরী পান ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। গত প্রায় দুই যুগ সময় ধরে চলনবিল অঞ্চলে বিনাচাষে রসুন চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এই এলাকার কৃষকরা। চলনবিলের গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় মূলত বেশি রসুন চাষাবাদ হয়ে থাকে। তাছাড়াও তারাশ, সিরাজগঞ্জ, উল্লাপাড়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুরা বিনাচাষে রসুন চাষ হয়। সরজমিনে গুরুদাসপুর এবং বড়াইগ্রামের উপজেলার প্রায় ১০টি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, চলনবিলের পানি নামার সাথে সাথে কৃষকের মাঝে চলছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা। বিলের যেদিকে চোখ মেলা যাবে সেদিকেই দেখা যাবে নারী-পুরুষের পাশাপাশি ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে ও বয়স্করা মিলে জমিতে লাইন ধওে বসে বসে রসুনের বীজ রোপন করছেন।

নাটোর কৃষি অফিস সুত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে নাটোরের ৭ টি উপজেলা প্রায় ২০ হাজার হেক্টও জমিতে রসুন চাষের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে। অফিস আশা করছে লক্ষ মাত্রা থেকেও বেশি রসুন চাষ হবে। শিধুলী গ্রামের কৃষক শ্রী বিমল কুমার জানান, আমন ধান কাটার পর পরই ওই জমিতে কাদার ওপর বোপন করা হয় রসুনের বীজ। উদবারিয়া গ্রামের কৃষক হযরত জানান, প্রতি বিঘা রসুন চাষে বীজ বাবুদ ২০ হাজার, সার-কীটনাশক, জমি লিজ ও অন্যান্য খরচ হয় প্রায় ২৩ হাজারসহ মোট খরচ হয় ৪৩ হাজার টাকা প্রতি বিঘা খরচ হয়। বিগত কয়েক বছরে বাজার দরপতনের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এ অঞ্চলের কৃষক।
চাষ পদ্ধতি: পানি নেমে যাওয়ার পর আমন ধান কাটার ২/১ দিনের মধ্যে ধানের খড় তুলে জমি প্রস্তুত করতে হয়। ২/১ দিনের মধ্যে যদি রসুনের বীজ রোপন করা না হয় ,তাহলে কাঁদা শুকিয়ে গেলে বীজ রোপন করা যায় না। এর পর প্রয়োজনীয় সার-কীটনাশক কাঁদা জমির উপর প্রয়োগ করার পর রসুন রোপন করা হয়। রোপন করা রসুনগুলোকে ধানের খড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ঢেকে দেওয়ার ৪/৫ দিনের মধ্যেই রসুনের চারা গজায়।
কৃষক জরিপ উদ্দিন মানবকন্ঠকে জানান, রসুনের দর-পতনের ভয়ে সাথি ফসল হিসাবে একই জমিতে তিন হাত অন্তর অন্তর বাঙ্গি-তরমুজের জায়গা রেখে দেওয়া হয়। রসুন উঠার ১৫ দিন আগে তারা তরমুজ-বাঙ্গির বীজ রোপন করেন। একই জমিতে দুই ফসল পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা প্রায় দুইযুগ ধরে রসুন চাষে ঝুঁকছে।
শিধুলী গ্রামের কৃষক ফিরোজ জানান, গত বছরে ৫ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছেন তিনি এবার সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করবেন। গত বছরের চেয়ে এবার খরচ একটু বেশি পড়ছে। কারন জমির লীজ-সার এবং শ্রমিকের দাম এবার বেশি। তিনি তার সবটুকু জমিতেই সাথি ফসল করবেন বলে জানান।

কৃষি বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্রী মিলন বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার চলনবিলে রসুনের চাষ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমরা সর্বদা কৃষক ভাইদের সহযোগিতা করে থাকি।

 

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *