Connecting You with the Truth

মংলা-ঘাসিয়াখালী নৌ চ্যানেল খনন সম্পন্নের আগেই ভরাট!

kabir 16-9-15বাগেরহাট সংবাদদাতা: মংলা-ঘাসিয়াখালী চ্যানেল খনন সম্পন্নের আগেই ভরাট। মংলা-ঘাসিয়াখালী নৌপথ বা চ্যানেলের অনিশ্চয়তা কাটছে না বাংলাদেশ-ভারত নৌ প্রটোকলভূক্ত । মংলা-ঘাসিয়াখালী চ্যানেল খনন সম্পন্নের আগেই ভরাট! এ পথ চালুর জন্য এ পর্যন্ত ৮০ লাখ ঘনমিটার বা ১ কোটি ৫৬ লাখ টন পলি অপসারণ করা হলেও ড্রেজিং করা অংশেই আবার নতুন করে ভরাট হয়েছে ৩০ লাখ ঘনমিটার বা ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টন পলি (প্রতি ঘন মিটার ১ দশমিক ৯৫ টন হিসেবে)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্প অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছরের জুন মাসে এই পথটি নৌযান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এখন পর্যন্ত তা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে।নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডবি¬উটিএ সূত্রে জানা গেছে, মংলা-ঘাসিয়াখালী নৌ-পথ সংলগ্ন এলাকায় উপকূলীয় বাঁধ ও চিংড়ি ঘের এবং অপরিকল্পিত ¯-ুইজ গেট নির্মাণের ফলে কুমারখালী নদীতে জোয়ারের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে একইসঙ্গে পলি জমে নদীর তলদেশ ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বলেশ্বর ও পশুর নদীর জোয়ারের সঙ্গে আসা পলি বাগেরহাটের রামপাল এলাকায় এই চ্যানেলে জমা হচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আব্দুল মতিন বলেন, ২২ কিলোমিটার নৌ-পথ খনন কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ চ্যানেলের কাজ করা হচ্ছে। এখানে এখন দেশি-বিদেশি মিলে ১২টি ড্রেজার কাজ করছে। সরকারি ৮টি ড্রেজার, চায়না হারবার কোম্পানির ২টি এবং বাকি দুটি সেবরকারি প্রতিষ্ঠানের।তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত ৮০ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণ করা হয়েছে। বাকি কাজও শেষ করা সম্ভব হবে। তবে ড্রেজিং করা জায়গায় নতুন করে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পলি জমেছে। এগুলো অপসারণের জন্য মেইন্টেন্যান্স ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন। এখানে নতুন করে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে তা হলো অপসারিত পলিমাটি রাখার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না।

জাহাজ চলাচলের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন জোয়ারের সময়ে ৮-১২ ফিট ড্রাফট লেভেলের বেশি জাহাজ চলাচল করতে পারে। কিন্তু ভাটার সময়ে ছোট আকারের জাহাজ (৮ ফিটের বেশি নয়) চলাচল করতে পারে। বিশেষ করে বগুড়া খাল এলাকায় ভাটার সময়ে ৫-৬ ফিট পানি থাকে। এখান দিয়েই বেশি সমস্যা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী দু মাসের মধ্যে এ জায়গার পলি অপসারণ করা সম্ভব হবে।মংলা ঘাসিয়াখালী নৌ-পথটি চালু হলে ৮৭ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌচলাচল করতে হবে না। তবে এটা চালু করতে হলে এই পথে ৩১টি খালসহ সংযুক্ত খালের মুখ দ্রুত খুলে দিতে হবে। বিশেষ করে মংলা-ঘাষিয়াখালী নৌ-পথ ড্রেজিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে বগুড়া, দাউদখালী, বিষ্ণুখালও ড্রেজিং করতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছে।

নদী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফর্মেশন সার্ভিস (সিইজিআইএস)-এর ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মমিনুল হক সরকার বলেন, বাংলাদেশ-ভারত নৌ প্রটোকলভূক্ত মংলা-ঘাসিয়াখালী নৌপথ খনন করে নাব্যতা সংরক্ষণ করা কঠিন। এজন্য সারা বছর ধরে ড্রেজিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। এ পথে এখন প্রশস্থতা থেকে গভীরতার দিকে জোড় দেওয়া হচ্ছে। পরিকল্পনায় ১০০ ফিট প্রশস্ত করার কথা থাকলেও তা কমিয়ে ৭০ ফিটে আনা হয়েছে। গভীরতার দিকে ১৫-১৬ ফিট করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও এ পথকে সচল করার জন্য একাধিক টাইডাল বেসিন করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তারা প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে রামপাল এলাকার ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল। ৩১ কিলোমিটার এ নৌপথের ৭-৮ কিলোমিটার ড্রেজিং করার পরে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর

Comments
Loading...