দেশজুড়ে
অনিয়ম-দুর্নীতির চরম শিখড়ে পাটগ্রামের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা
লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ২০১৩ সালে সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষার ফলাফলে লালমনিরহাট জেলাটি শিক্ষার মানউন্নয়নে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল। বর্তমান বাস্তবতার আলোকে এ জেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যান্ত নাজুক। পাটগ্রাম উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায় অত্র উপজেলার শিক্ষা সংক্রান্ত অনিয়ম দুর্নীতি সবার শীর্ষে। এ অবস্থা সৃষ্টির পিছনে রয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দায়িত্বে থাকা জামায়াতপন্থী দুর্নীতিবাজ ভারপ্রাপ্ত টিও ফিরাজুল আলম ও এটিও ফারুক হোসেন।
তার বিরুদ্ধে শিক্ষা অফিসে যোগদানের পর থেকে সু-কৌশলে শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রক্স প্রকল্পের মাধ্যমে উপকরন ক্রয়, শিক্ষক প্রশিক্ষন, পোষাক ক্রয়, উপবৃত্তি বিতরন, শিক্ষকদের মাসিক বেতন প্রদান, ভুলে ভরা প্রশ্নপত্র ও নিম্নমানের খাতা সরবরাহ, প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিজিটালাইজড করন, ছিলিপের টাকা, রুটিন মেরামতের টাকাসহ ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টয়লেট সংস্কারে বরাদ্দকৃত টাকার অধিকাংশ আত্মসাৎসহ আফতাব নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জমগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিশেষ বরাদ্দ ৩লক্ষ করে মোট ৬ লক্ষ টাকার অংশ লুটপাটেরও অভিযোগ উঠেছে।
ভারপ্রাপ্ত টিও ফিরোজুল আলম ও এটিও ফারুক হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর কুতুবুল আলমের নিজ জেলা নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বাসিন্দা হওয়ায় তারা জুটিবদ্ধ হয়ে ইউএনও’র অজান্তে প্রভাব বিস্তার ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে আঁতাত করে শিক্ষকদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাদের কুটনৈতিক ষড়যন্ত্রে এ শিক্ষা অফিসে কর্তব্যপালন করতে আসা টি ও, এটিওরা এখানে চাকুরি করতে নিরুৎসাহী হওয়ায় এ শিক্ষা অফিসে জনবল সংকট স্পষ্ট । তাদের এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ শিক্ষক কর্মচারীগণ। যে কোন মুহুর্তেই ঘটতে পারে আশংকাজনক ঘটনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ”আমরা হলাম খেলার পুতুল, কার কথা কে শোনে এমন অযোগ্য টিও, এটিও’র পাল্লায় পড়লে সব কিছুই প্রশ্নবৃদ্ধ। পার্শ্ববর্তী জেলার জলঢাকা উপজেলায় গ্রামের বাড়ী হওয়ায় তাদের মাঝে অফিস ফাঁকির প্রবনতাও লক্ষনীয়।”
এছাড়াও দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্বে থাকা ইউআরসি ইন্সেক্টেটর লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ। মোটা অংকের টাকার বিনিময় একই শিক্ষককে একাধিক প্রশিক্ষনে অন্তভুক্ত করে শিক্ষকদের মাঝে সমালোচিত হয়েছেন তিনি এবং প্রশিক্ষনের উপকরন ক্রয় এর টাকা ভুয়া বিল-ভাউচার দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অত্র উপজেলার প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষৎ অন্ধকারে থাকায় হতাশায় ভুগছেন অবিভাবকগণ। চলমান শিক্ষা পরিস্থিতি কথা ভেবে অভিভাবক হোসেন আলী বলেন, ব্যাঙ্গের ছাতার মত স্কুল জাতীয়করন, অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ, অতিরিক্ত বেতনবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা অব্যহৃত থাকায় প্রাথমিক শিক্ষার ভবিষৎ হতাশাজনক। তাই সরকারের উচিত সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি না করে শিক্ষকদের দায়িত্বপালনে বাধ্য করা।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত টিও ফিরোজুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ব্যস্ততার অজুহাতে পালিয়ে যান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর কুতুবুল আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, জনবল সংকট এর কারণে এঅবস্থার সৃষ্টি তবে অভিযোগ গুলোর তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে শিক্ষা কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল বলেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।