Connect with us

জাতীয়

এসডিজি বাস্তবায়নে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

Published

on

bdp

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য আমি দক্ষিণ এশিয়ার পার্লামেন্টগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি গড়ে তোলার উপর জোর দিতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রধান প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসডিজি বাস্তবায়নে পার্লামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, জাতীয় পর্যায়ে এসডিজি লক্ষ্যকে সমন্বিতভাবে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে এবং এর কার্যক্রম মনিটর করার জন্য বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে।রবিবার স্থানীয় একটি হোটেলে ’সাউথ এশিয়ান স্পিকারস সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ’আমি মনে করি, ২০৩০ এজেন্ডা হচ্ছে একটি সম্মিলিত পথ-পরিক্রমা। এর বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের সরকারি এবং বেসরকারি, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক, সকল উৎস থেকে অধিক পরিমাণে সম্পদের সরবরাহ প্রয়োজন। সুতরাং শুরু থেকেই বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তা বা ওডিএ-এর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

তিনি বিভিন্ন স্টোকহোল্ডার যেমন- নারী-পুরুষ, নাগরিক সমাজ, কম্যুনিটি এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, যুবসমাজ ইত্যাদির সঙ্গে অংশীদারিত্ব, আলোচনা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য আমি দক্ষিণ এশিয়ার পার্লামেন্টগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী এসডিজির পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন দেশের স্পিকার এবং সংসদ সদস্যদের প্রয়োজনীয় বাজেট অনুমোদনেরও উদাত্ত আহ্বান জানান।

দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের রবিবার ছিল শেষ দিন। সম্মেলনের যৌথ আযোজক ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ। সহযোগিতায় ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো-ফ্রি কিডস।

আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ভারতের লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারী এসোসিয়েশন (সিপিএ) চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শ্রীলংকার পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার থিলাঙ্গা সুমাথিপলা, আফগানিস্তানের ওলেসি জিগরার স্পিকার আব্দুর রউফ ইব্রাহিম, ভূটানের জাতীয় সংসদ সংগুর স্পিকার জিগমে জাংপো, মালদ্বীপের মজলিসের স্পিকার আব্দুল্লাহ মাসেহ মোহামেদ।

আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী অনুষ্ঠানে সম্মেলনের ঢাকা ঘোষণা পড়ে শোনান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে তামাকের ব্যবহার মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো যেমন- বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমার এবং শ্রীলঙ্কায় তামাক-গ্রহণকারীর মোট সংখ্যা প্রায় ৩৮৩ মিলিয়ন। এটা বিশ্বের মোট ১ দশমিক ১ বিলিয়ন তামাকগ্রহণকারীর সংখ্যার ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।

তিনি বলেন, এসব দেশে তামাকজনিত আর্থিক এবং স্বাস্থ্যগত ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। শুধু ভারত এবং বাংলাদেশে তামাক গ্রহণজনিত কারণে প্রতিবছর কমপক্ষে ১ দশমিক ১ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার সরকার জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কনভেনশন ‘এফসিটিসি’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আমরা ২০১৩ সালে ধূমপান এবং তামাক জাতীয় পণ্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন করেছি এবং ২০১৫ সালে সংশ্লিষ্ট বিধি পাশ করেছি।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের তামাক জাতীয় পণ্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন এবং ২০১৫ সালের বিধি অনুসরণ করে আগামী মার্চ থেকে আমরা তামাকজাত পণ্যের মোড়কে ছবি সম্বলিত সতর্কবার্তা সংযোজন করতে যাচ্ছি। আমাদের প্রতিবেশি ভারত, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কায় এটা ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকাণ্ডকে উৎসাহ দিতে আমরা ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে তামাকের উপর ১ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করেছি। বাংলাদেশে এটাই এ ধরণের প্রথম পদক্ষেপ।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় দুটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করছে। এগুলো হচ্ছে- তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়ন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে- তামাক চাষ প্রসারের ব্যাপকতা হ্রাস এবং খাদ্য নিরাপত্তার হুমকি মোকাবিলা। অন্যটি হচ্ছে তামাকের চাহিদা এবং সরবরাহ হ্রাসের জন্য একটি ব্যাপকভিত্তিক জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়ন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও আমরা তামাক নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি, কিন্তু আমরা এ নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। এফসিটিসি বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাসের জন্য আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে। ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে চাই।

অনুষ্ঠানে আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীকে ক্রেস্ট উপহার দেন। বাসস।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *