Connect with us

দেশজুড়ে

গাইবান্ধার ছোট নদীগুলো বুক জুড়ে সবুজের ঢেউ

Published

on

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
“আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাটুজল থাকে।” কবিগুরু রবি ঠাকুরের দেখা এ নদীতে বৈশাখ মাসে হাটুজল থাকলেও গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর বেশিভাগ নদ-নদীতে একেবারেই জল নেই। সেখানে এখন পানির ঢেউয়ের বদলে সবুজের ঢেউ। রূপালী মাছের বদলে ফলসে সবুজ ধান। জেলের বদলে কৃষকের আনা-গোনা।
এক সময় পলাশবাড়ী নদীবিধৌত এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। পলাশবাড়ীর মানচিত্র নদ-নদী, খাল-বিলে ভরা ছিল। ছিল নদী নির্ভর জীবন-জীবিকা। জেলে পরিবারের সংখ্যাও ছিল অনেক। আজ আর তেমন একটা চোখে পড়েনা সেই নদী-নালা, খাল-বিল, নদী-নির্ভর জীবন-জীবিকা, জেলে পরিবার। পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। পানিশূন্য নদী-নালা, খাল-বিল এখন সবুজ ধানের মাঠ।
উপজেলার এক সময়কার উত্তাল ঢেউয়ের কল্লোলে ভরা করতোয়া, আখিরা, মৎস্য, গড়েয়া, মোলায়েম খালী, নলেয়া নদীসহ বেশিরভাগ নদী-নালা, খাল-বিল পলি জমে ভরাট হয়ে আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। এখন আর সেখানে নৌকা চলে না, চলে লাঙ্গলের ফলা।
সরজমিনে করতোয়া নদী পাড়ের মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এ নদীতে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। কখনো কোনো খননের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে নদী। এতে একদিকে যেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না অন্যদিকে পানির অভাবে এলাকার জমিগুলোতে সেচ কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকার কৃষকরা আগে এই নদীর পানি দিয়েই সেচ কাজ চালাতো। আজ ব্যয়বহুল স্যালো মেশিনে পানি তুলে সেচ কাজ চালাতে হচ্ছে। ফলে ফসলের উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে গেছে অনেক। এছাড়া নদী ভরাট হয়ে পানির ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বর্ষার সময় সামান্য বৃষ্টিতেই নদীর কুল ছাপিয়ে পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। দেখা দেয় বন্যা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আবাদি জমির ফসল। তলিয়ে যায় মানুষের বসতভিটা। চরম দুর্ভোগে পড়ে নদী তীরবর্তী মানুষ।
মৎস্য নদী যা একসময় বাহারি মাছে ভরা ছিল তা এখন শুধুই স্মৃতি। মৎস্য নদীতে মাছ তো নেইই, নেই পানিও। মৎস্য নদীপাড়ের বাসিন্দা অধ্যাপক আতাউর রহমান এভাবেই বর্ণনা করলেন মৎস্য নদীর কথা। তিনি আরো বলেন, খনন করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে পারলে একদিকে যেমন মিলবে প্রাণীজ আমিষপূর্ণ মাছ অন্যদিকে চলবে নদীর পানির সাহায্যে সেচকার্য। এতে কৃষকদের বইতে হবে না বিরাট অংকের সেচ খরচের বোঝা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *