Connect with us

ঢাকা বিভাগ

নগরকান্দায় রাতের আধারে সংখ্যালঘুর জায়গা দখলের চেষ্টা

Published

on

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের নগরকান্দায় রাতের আধারে এক অসহায় ভ’মিহীন সংখ্যালঘুর জায়গা দখল করার অপচেষ্টা চালিয়েছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী চক্র । ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে। জায়গাটির মালিক পংকজ কুমার সাহা এ ব্যাপারে নগরকান্দা থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছে।
-জানা যায়, ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ১৫৬ নং গাংজগদিয়া মৌজার ৪৯৯ নং দাগের ৫ শতাংশ খাস জমি সরকার ভূমিহীন পঙ্কজ কুমার সাহা ও তার স্ত্রী কণিকা রানী সাহাকে গত ০১/০১/১৯৯৫ইং তারিখে ৯৯ বছরের জন্য কবুলিয়ত সম্পাদন করে দেয়। গত ২৮-০৯-২০১৬ ইং তারিখে নগরকান্দা পৌরসভার গাংজগদিয়া গ্রামের গুরুপদ বিশ্বাসের পুত্র উত্তম বিশ্বাস উক্ত সম্পত্তিটি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য ফরিদপুর জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করে। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ২৫-১০-২০১৬ ইং তারিখের মধ্যে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ১৮/১০/২০১৬ইং তারিখে কবুলিয়ত প্রাপ্ত পঙ্কজ স্হাা ও তার স্ত্রীকে নোটিশ প্রেরণ করেন। পংকজ কুমার সাহা ও তার স্ত্রী এ বিষয়টি জানতে পেরে বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে সরকারকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেন। ২৫-১০-২০১৬ ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উক্ত সম্পত্তিটি পংকজ কুমার সাহা ও তার স্ত্রী কনিকা সাহার নামে ৯৯ বছরের কবুলিয়তের কথা উল্লেখ করেন ।
প্রতিবেশি ভূমিদস্যু নামে খ্যাত ইমান উদ্দিন মাষ্টারের পুত্র জালালের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে জায়গাটির উপর। জায়গাটি পেতে বিভিন্ন চেষ্টা অব্যাহত রাখে এবং বন্দোবস্ত গ্রহণকারী পঙ্কজ গংদের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করে। ভূমি দস্যু জালাল কোন বৈধ কাগজপত্র বা পূর্বানুমতি ছাড়াই গত রোববার রাতে জায়গাটি দখলে নিতে ঘর তৈরী করতে যায় । খবর পেয়ে পঙ্কজ সাহা থানা পুলিশের স্বরণাপন্ন হলে পুলিশ ঘটনা স্থলে যেয়ে জালালকে ঘর তুলতে নিষেধ করেন এবং শান্তি শৃঙ্খলা বিঘিœত না ঘটানোর অনুরোধ করেন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই জালাল কতিপয় বহিরাগত লোকজন নিয়ে অসুস্থ পঙ্কজ সাহাকে মারধর করে। উল্লেখ্য যে উক্ত ভূমি দস্যু জালালের পিতা ইমান উদ্দিন মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ না করেও দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা গ্রহণ করে আসছেন। তিনি যে বাড়িতে অবস্থান করছেন উক্ত জায়গাটিও সরকারের খাস সম্পত্তি। ইমান উদ্দিনের বৈধ কোন কাগজপত্র না থাকলেও সে উক্ত সম্পত্তিটি দখলে রেখে বিএস জরিপে নিজ রেকর্ড করিয়েছেন। জালাল সম্পর্কে এলাকায় অনেক মুখোরচর কাহিনী প্রচার রয়েছে। জানা যায় জালাল তার চাকুরীর সুবাদে প্রচুর অবৈধ অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছে। যা তার আয়ের সাথে মোটেও সঙ্গতিপূূর্ণ নয়। জালাল ইতিপূর্বে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সীল স্বাক্ষর জাল করায় একাধিক বার গ্রেফতার ও হয়েছে।
পংকজ কুমার সাহা বলেন, আমি কবুলিয়তের কোন শর্ত ভঙ্গ করি নাই। বিজ্ঞ আদালতে মামলা থাকার পরেও গত ২৬ জানুয়ারী ২০১৭ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স¦াক্ষরিত এক নোটিশে জানতে পারলাম আমার কবুলিয়তটি বাতিল করা হয়েছে। আমি বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে গত ৩০-০১-২০১৭ ইং তারিখে কনডেমপ্ট অব কোর্টে মামলা দায়ের করি । যার মিস কেস নং ৩/২০১৭। নগরকান্দা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন দুলু বলেন, সুযোগ বুঝে ভুমি দস্যু জালাল রাতের অন্ধকারে কতিপয় বহিরাগত লোকজন নিয়ে জায়গা দখলের নামে যে সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। নগরকান্দা পৌরসভার প্যানেল মেয়র নিমাই চন্দ্র সরকার বলেন, এই জায়গাটি দীর্ঘদিন যাবত পংকজ সাহা গংরা ভোগদখল করে আসছেন । আমার জানামতে পংকজ কুমার সাহা একজন ক্যান্সার আক্রান্ত অসহায় মানুষ, এই জমিটি হাত ছাড়া হলে তার মাথা গোঁজার ঠাই থাকবে না । এ বিষয়ে অভিযুক্ত জালাল নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমি জায়গাটি পেতে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *