Connect with us

দেশজুড়ে

পীরগঞ্জে কয়লাখনি পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস

Published

on

Pirgonj-Rangpur-Photo=a.p.s-1=27-02-2016মনোয়ার হোসেন, পীরগঞ্জ, রংপুর: উপমহাদেশের উৎকৃষ্টমানের পীরগঞ্জের খালাশপীর কয়লা খনির ভাগ্য খুলতে শুরু করেছে। শনিবার প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-১ জাহাঙ্গীর আলম এবং হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খনি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
কয়লা খনি প্রকল্প সূত্র জানায়, এশিয়া মহাদেশের শ্রেষ্ঠ কয়লা খনিটি পীরগঞ্জের মদনখালী ইউপি’র মাগুড়া গ্রামে। উপজেলা সদর থেকে ১৩ কিঃমিঃ পশ্চিমে খনিটির অবস্থান। সেখানে ১৯৫৯ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত বাংলাদেশ ভূ-তাত্তি¡ক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি) পরীক্ষার নিরীক্ষার পর খালাশপীর খনির অবস্থান নির্ণয় করে। এরপর ১৯৮৯-১৯৯০ সালে জিএসবি ২৫বর্গ কিঃমিঃ খনি এলাকায় প্রাথমিকভাবে ৪টি কূপ খনন করে ৩টিতে ২৮৪মিটার থেকে ৪৮০মিটার গভীরতায় উন্নতমানের বিটুমিনাস কয়লার সন্ধান পায়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে খনির টপোগ্রাফিক্যাল সার্ভের জন্য কনসোর্টিয়াম অফ হোসাফ ইন্টারন্যাশনাল ও চায়নার সেনউইন মাইনিং গ্র“প সরকারের কাছে আবেদন করে। একটি চীনা প্রতিষ্ঠান খনিজ জরিপের প্রাথমিক কাজ দ্বি-মাত্রিক ও ত্রি-মাত্রিক (২/ডি ও ৩/ডি) সিসমিক সার্ভের জন্য ২০/২৫ ফিট বোরিং করে সুড়ঙ্গঁ পথে খনিতে সাড়ে ৭ হাজার বোমা বিষ্ফোরণ করে। পাশাপাশি কয়লার গভীরতা, পুরুত্ব, মজুদ, স্তর জানতে ৭টি কূপ খনন করে। অপরদিকে ভারতের জিওটেক কোম্পানীও ১৪টি কূপ খনন করে সবগুলোর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে হোসাফ কনসোর্টিয়াম ২০০৬ সালের আগষ্টে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ে সমীক্ষা প্রতিবেদন (ফেসিবিলিটি রিপোর্ট) জমা দিয়ে মাইনিং লিজের জন্য আবেদন করেছে। সূত্রটি আরও জানায়, ২৫বর্গ কিঃ মিঃ আয়তনের ৮স্তর বিশিষ্ট খালাশপীরের কয়লা খনিতে সম্ভাব্য কয়লা মজুদের পরিমাণ ৬৮৫ মিলিয়ন টন। যা দিয়ে বাংলাদেশের ২’শ বছরের কয়লার চাহিদা মেটানো সম্ভব। সমীক্ষার পর ২ দশমিক ৫২ কিঃ মিঃ এলাকায় ৮ স্তর বিশিষ্ট খনিতে ১৪৩ মিলিয়ন টন প্রমাণিত মজুদ কয়লা রয়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা হলে প্রমাণিত মজুদ কয়লার ৪০ ভাগ উত্তোলন করলে প্রতি বছর ২মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা যাবে। যা দিয়ে প্রথম ৫বছর প্রতিদিন ৫’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং কয়লা উৎপাদন বাড়ালে ১০ বছরে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। সেইসাথে ৪/৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। এখানে বিটুমিনাস নামের উচ্চ জ্বালানী ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লা রয়েছে। প্রতি পাউন্ড কয়লার জ্বালানী ক্ষমতা ১০হাজার ৫’শ ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (বিটিইউ)। এতে ক্ষতিকর সালফারের উপস্থিতি মাত্র এক ভাগেরও কম। খনির এক স্তরে ধাতু গলানোর কাজে ব্যবহৃত কোকিংকোল ও চুনাপাথর এবং কাঁচ বালি রয়েছে, এগুলো অনেক খনিতেই পাওয়া যায় না। খালাশপীর কয়লা খনিকে ঘিরে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছে পীরগঞ্জবাসী। এ ব্যাপারে গতকাল পরিদর্শনে আসা হোসাফ গ্রপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন-পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রেখে ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করলে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না। আমরা খনি সমীক্ষার প্রতিবেদন ২০০৬ সালে সরকারের কাছে জমা দিয়েছি। সরকার কয়লানীতি চুড়ান্ত করলে এ খনির (খালাশপীর কয়লা খনি) কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মসুচী বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-১ জাহাঙ্গীর আলম বলেন-এলাকার জনগনকে সাথে নিয়ে সরকার কয়লা উৎপাদনে যাবার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ জন্য আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। উলে­¬খ্য, ২০০৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর পীরগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লাখো মানুষ খালাশপীর কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের দাবী জানালে তিনি জনতাকে কয়লা উত্তোলনের প্রতিশ্র“তি দেন। এ সময় আশান্বিত হয়ে উঠে পীরগঞ্জবাসী। গতকালের পরিদর্শনকে পীরগঞ্জবাসী কয়লা খনির ভাগ্য খুলছে বলে মনে করছেন। এ সময় খনি এলাকায় হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। তারা সমস্বরে খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের দাবী জানায়।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *