Connect with us

আন্তর্জাতিক

  যুক্তরাষ্ট্রে চলছে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ

Published

on

tmbপ্রেসিডেন্ট হিসেবে ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মানতে না পারা ব্যক্তিদের বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ওরেগন অঙ্গরাজ্যের সর্ববৃহৎ নগর পোর্টল্যান্ডে বিক্ষোভ সহিংস আকার ধারণ করেছে। শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গণমাধ্যম এই বিক্ষোভ উসকে দিচ্ছে বলে এক টুইট বার্তায় অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভোটের ফলাফলে ট্রাম্পের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর নিউ ইয়র্ক থেকে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো চলেছে। এদিন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বারাক ওবামার বৈঠক চলাকালে হোয়াইট হাউসের বাইরে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে জড়ো হয়ে বিভিন্ন বয়সী মানুষ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। এ সময় তাদের হাতে ছিল ট্রাম্পবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড।

বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী ওরেগনের পোর্টল্যান্ড নগরীর কেন্দ্রস্থলে জড়ো হয়। তারা দোকান ও গাড়ি ভাঙচুর করে, পটকা ছুড়ে মারে এবং আবর্জনার স্তূপে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ ওই পরিস্থিতিকে ‘দাঙ্গা’ ঘোষণা করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পিপার স্প্রে ও কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ব্যবহার করে। সেখান থেকে অন্তত ২৯ জনকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ব্যাট ও পাথর ছিল। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে সেগুলো ছুড়ছিল বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ।

‘ট্রাম্প ইজ নট মাই প্রেসিডেন্ট’ (ট্রাম্প আমার প্রেসিডেন্ট না)—শীর্ষক স্লোগানে বুধবার থেকে চলা এ বিক্ষোভের ব্যাপকতা বেড়েই চলেছে। ট্রাম্পবিরোধীরা বলছে, নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের জয়জয়কার নাগরিক অধিকারের প্রতি এক বড় আঘাত।

দেশটির পূর্বাঞ্চলে বিক্ষোভকারীরা ওয়াশিংটন, বাল্টিমোর, ফিলাডেলফিয়া ও নিউ ইয়র্কে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে। আর পশ্চিমাঞ্চলের প্রতিবাদকারীরা লস অ্যাঞ্জেলেস, সানফ্রানসিসকো, অকল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়ায় মিলিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পৃথকভাবে বিক্ষোভের পাশাপাশি রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে। অন্যদিকে ডেনভারে হাজারো মানুষের ট্রাম্পবিরোধী র্যালি ছিল নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় কর্মসূচি।

ফিলাডেলফিয়ায় বিক্ষোভকারীরা সিটি হলের কাছে জড়ো হয়। তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট নন’, ‘ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ট্রান্স’, ‘আমেরিকাকে সবার জন্য নিরাপদ কর’ ইত্যাদি লেখা ছিল। বাল্টিমোর পুলিশ জানায়, প্রায় ছয় শ জনের একটি দল নগরীতে মিছিল করে এবং সড়ক অবরোধ করে। সানফ্রানসিসকোতে উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা রংধনু রঙের ব্যানার নিয়ে মিছিল করে, অনেকের হাতে মেক্সিকোর পতাকাও ছিল। অনেকের হাতে ‘কোনো ঘৃণা নয়, কোনো ভয় নয়, অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগতম’, ‘ট্রাম্পের অপসারণ চাই’ ইত্যাদি লেখা ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা গেছে। তবে বৃহস্পতিবারের কর্মসূচির তীব্রতা বুধবারের চেয়ে কিছুটা কম ছিল। উপস্থিতিও ছিল কম। তবে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে কিশোর ও যুবকদের উপস্থিতি বেশি ছিল।

ভার্জিনিয়ায় বিক্ষোভকারীদের একজন তরুণ জো ডেনিয়েল বলেন, ‘একজন ধর্মান্ধ ও ঘৃণিত ব্যক্তিকে আমি কোনোভাবেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নিতে পারছি না। এটা আমার জন্য খুবই বেদনাদায়ক।’

বিক্ষোভের মুখে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় স্থাপনা নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটান হোটেল ও ট্রাম্পের আবাসস্থল ট্রাম্প টাওয়ারকে ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।

এদিকে নির্বাচনী প্রচারণাকালে ট্রাম্পের দেওয়া বক্তব্যের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী, নারী, মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের ওপর সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের মতে, এ ধরনের যেকোনো ঘটনা ঘটলে তার জন্য ট্রাম্পই দায়ী থাকবেন।

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের পেছনে গণমাধ্যম উসকানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার রাতে এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘খোলামেলা ও সবচেয়ে সফল একটি নির্বাচন মাত্র শেষ হলো। আর এখন গণমাধ্যমের উসকানিতে পেশাদার প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নামছে। এটা খুবই অন্যায়।’

গত মঙ্গলবারের নির্বাচনে সাবেক ফার্স্ট লেডি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেমোক্র্যাটদলীয় হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। পপুলার ভোট বেশি পাওয়ার পরও ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের পদ্ধতিতে ট্রাম্পের কাছে হেরেছেন হিলারি। ট্রাম্পের এই বিজয় মার্কিন নাগরিকের একাংশকে হতাশ করেছে। সেই হতাশা পরিণত হয়েছে প্রতিবাদে। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর এমন বিক্ষোভের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে বিরল।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *