Connect with us

রংপুর

শীঘ্রই কাটছে না বেরোবির অচলাবস্থা-সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা

Published

on

তপন কুমার রায়, বেরোবি প্রতিনিধি: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৪ মাস ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। দীর্ঘ দিন যাবৎ বন্ধ হয়ে আছে একাডেমিক ও প্রশাসনিক  কার্যক্রম। উপাচার্য অপসারণের অনড় সিদ্ধান্তে  আন্দোলন আর উপাচার্যর স্বেচ্ছাচারিতার দোলাচালে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারন শিক্ষার্থীদের। ক্লাস পরীক্ষাহীন অবস্থায় কেউবা গ্রামের বাসায় আর কেউবা বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে খুলছে বলে পরে আছে ছাত্রাবাস গুলোতে। কিন্তু বেশ কিছু সূত্র থেকে খবর পাওয়া গেছে শীঘ্রই এই অচল অবস্থা কাটার কোন ধরনের সম্ভাবনাই নেই। দুই পক্ষের অনড় সিদ্ধান্তে এত সহজেই ও শীঘ্রই এর সমাধান আসছে না বলে জানা গেছে। সূত্রটি বলছে, এক পক্ষ তাদের অনড় সিদ্ধান্তে উপাচার্য অপসারন করতে সরকারের বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করে যে টুকু আশ্বাস পাচ্ছেন সেই আশ্বাসের বাণীটুকু বুকে আগলে উপাচার্য অপসারণ হচ্ছে হচ্ছে বলে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে, উপাচার্য নিজেই ঢাকায় থেকে প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, শিক্ষামন্ত্রী-সচিবসহ বিভিন্ন মহলে নিজের পদ বহাল রাখার জন্য  ও সমাধানের পথ খুজতে তদবীর চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সমাধান আর আসছে না যদিও উপাচার্য নিজের পদ বহাল রাখতে সমাধানের জন্য আলোচনাসহ বিভিন্ন পন্থার কথা বলছে তবু এর চুড়ান্ত সমাধান আসছে না বলে সূত্রটি জানিয়েছে। কেননা, আন্দোলনরতরা এই উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প কোন পন্থা অবলম্বন করবে না বলে সাফ জানিয়েছেন। এমতাবস্থায় কবে নাগাদ এই সমাধান হবে এর কোন কূলকিনারা খুজে পাওয়া মুশকিল বলে অনেকেই মনে করছেন।

দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি: দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়টি অচল অবস্থা অত:পর বন্ধ হয়ে থাকায় চরম বিপাকে পরেছে সাধারন শিক্ষার্থীরা । পূর্বের দীর্ঘ সেশনজটের সাথে যুক্ত হচ্ছে নতুনভাবে আরো একটি সেমিষ্টারের নতুন জট। যার ফলাফল শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক জীবনে বয়ে আনবে চরম ভোগান্তি। ক্যারিয়ার জীবনে পিছনে পড়ে থেকে গুনতে হবে ব্যর্থতা আর গ্লানির শত কাব্যগ্রন্থ। বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ছয় হাজারের চার-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী নিরাশায় গ্রামের বাসায় অবস্থান নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু থাকা একমাত্র মেয়েদের হল শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের অবস্থা প্রায় ছাত্রীশূণ্য বলে জানা গেছে।

স্থগিত ভর্তি পরীক্ষা ও সরকারী উদ্যেগ কামনা:  দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম প্রায় শেষ হলেও চলমান সংকটের কারনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখই আজ পর্যন্ত  পূন:নির্ধারন করা হয়নি। রতন নামের এক ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বছরে ভর্তি হবে কিনা তা নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারছে না। কারও কোন উদ্যেগও লক্ষ্য করা যায় নি। তাই শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কারমাইকেল কলেজে গণিত বিভাগে ভর্তি হয়েছি।

এমতাবস্থায় অবিভাবক ও রংপুরের সুশীল সমাজের সচেতন নাগরিকগণ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বাঁচাতে ও ভর্তি পরীক্ষা নিতে সরকারের উদ্যোগ কামনা করেন।

এবার আন্দোলনে যোগ হলো গণ অনশন: গত ২৭শে অক্টোবর বিভিন্ন দাবি আদায়ে উপাচার্যকে স্বারকলিপি প্রদানের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলনের ধারাবহিকতায় উপাচার্যকে বয়কট, শিক্ষকদের পদত্যাগ, অবাঞ্চিত ঘোষনা, সমাবেশ, আল্টিমেটাম থেকে সবশেষে আমরণ অনশনের রুপ নেয় এই উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন। অবশেষে এই আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগকরতে আজ সোমবার থেকে গণ অনশন শুরু করে আন্দোলনরতরা। এদিকে পূর্বের ১৫ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উদ্যেগে স্থগিত থাকা শিক্ষামন্ত্রীর সাথে বৈঠক নতুন ভাবে করা যায় কিনা এ বিষয়ে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে আন্দোলনরতদের জানানো হয়েছে। তবে এই পন্থায় সমাধানের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না বলে জানা যায়। বিষয়টি সম্পর্কে আন্দোলনরত সমন্বিত অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন বলেন, আমরা গতকাল সকাল বেলা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে পূর্বের স্থগিত আলোচনাটি নতুনভাবে শুরু করা যায় কিনা সে বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা জানতে পেরেছি। যদি হামলাকরীদের শাস্তির ব্যাপারে উদ্যেগ আর শিক্ষামন্ত্রী কর্তৃক এই উপচার্যকে অপসারন করার আশ্বাস দেওয়া হয় তবেই আলোচনার জন্য আমরা অনশন প্রত্যাহার করব।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম নূর-উন-নবী সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলাদেশেরপত্রকে বলেন, আমি ইতো মধ্যে মাননীয়  শিক্ষামন্ত্রী ও  সচিব মহোদয়ের বরাত দিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে আন্দোলনরতদের আলোচনা করার বিষয়ে জানিয়েছি। কবে নাগাদ আলোচনা হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ২৭ তারিখ পর্যন্ত ব্যস্ত থাকায় এর আগে কিছু বলা যাচেছ না। তিনি আরো বলেন, শিক্ষামন্ত্রী তাদেরকে অনশন ভঙ্গ করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে ক্লাশ, পরীক্ষা চালু ও ভর্তি পরীক্ষা নিতে বলেছেন কিন্তু তা ওনারা শুনছেন না।  আপনার অপসারন ছাড়া আন্দোলনরতরা আলোচনায় অন্য কোন পন্থা অবলম্বন করবে না এমনটি  জানালে তিনি বলেন, সে বিষয়ে সরকার ও শিক্ষামন্ত্রী বুঝবেন। অন্যথায় আমার কিছু করার থাকবে না।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *