দিনাজপুর
হাকিমপুর ইউএনও কে অবাঞ্চিত ঘোষণা আ.লীগের
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান জানান, গতবৃহস্পতিবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জরুরী সভায় ইউএনওকে বর্জনসহ তাঁর সকল কর্মকান্ড বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৮ জানুয়ারী রাতে এলাকাবাসীর পক্ষে ইউএনও এর বিরুদ্ধে আদিবাসীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দে টাকা আত্মসাৎসহ, জমি খারিজ, পুকুর লিজ, খাস জমি বিতরন, গু”ছগ্রাম তৈরি, হাট বাজার লীজ, খাসমহল হাট ও বাজারে দোকান ঘর লিজ, দোকান ঘর নির্মান ও সংস্কার, এছাড়াও চল্লিশ দিনের কর্মসূচী, এডিপি হতে বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প, অফিসার ক্লাবে ভুয়া প্রকল্প, বিভিন্ন ঠিকাদারী কাজ, মোবাইল কোর্ট, নিলাম, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে বিশাল চাদা আদায়ের অভিযোগ এনে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এবং হিলি স্থলবন্দর আমদানী রপ্তানীকারক গ্রæপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন।
এছাড়াও হাকিমপুর আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমবায় সমিতি ও সাংষ্কৃতিক একাডেমি “পার্বত্য চট্রগ্রাম ব্যতীত দেশের অন্যান্য এলাকায় বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত উন্নয়ন সহায়তা” প্রকল্পের বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে গত ১২ জানুয়ারী সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
হাকিমপুর আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমবায় সমিতি ও সাংষ্কৃতিক একাডেমির সাধারন সম্পাদক গ্রেগারী সরেন জানান, “পার্বত্য চট্রগ্রাম ব্যতীত দেশের অন্যান্য এলাকায় বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত উন্নয়ন সহায়তা” প্রকল্পে গত ২০১২-১৩ এবং ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে যে পরিমান বরাদ্দ এসেছিলো তার কোন কাজই করেনি ইউএনও। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ১ম ও ২য় কিস্তির বরাদ্দ ছিলো ১৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এসব টাকা যে সব খাতে খরচ করার কথা প্রত্যেকটি খাতের কমিটি করে কাজ করার কথা থাকলেও তা তিনি না করে একাই অত্যন্ত নি¤œমানের কিছু কাজ করে বেশিরভাগ টাকাই আত্মসাত করেছেন।
অভিযোগকারিরা আরো জানান, আদিবাসীদের মধ্যে প্রতিটি ২৫ হাজার টাকা মূল্যের নতুন রিক্য্রা/ভ্যান বিতরন করার কথা থাকলেও ইউএনও কোন কমিটি ছাড়াই পুরাতন নি¤œমানের ভ্যান কিনে তাদের মাঝে বিতরন করেছেন।
পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এবং হিলি স্থলবন্দর আমদানী রপ্তানীকারক গ্রæপের সভাপতি হারুন উর রশিদ আরো অভিযোগ করেন, তিনি বিজয় দিবস পালন কমিটির অর্থ উপ-কমিটির আহবায়ক ছিলেন। অথচ ইউএনও তাঁকে কোন কিছু না জানিয়েই হাকিমপুরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে। এতে করে দলের ভাবমূতি চরমভাবে ক্ষুর্ন হয়েছে।
অভিযোগকারীরা আরো জানান, হিলি বাজারের খাস জায়গার উপর যে সব দোকান ঘর রয়েছে ইউএনও তাঁদের কাছ থেকে যখন ইচ্ছে তখন চাঁদা দাবী করেন। চাঁদা না দিলে দোকান ঘর ভেঙ্গে দেন। পরে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে পুনরায় সে দোকান ঘর নির্মান হয়। হাকিমপুরে কোন সহকারী কমিশনার (ভুমি) না থাকায় তিনি অতিরিক্ত হিসেবে সে দায়িত্বও পালন করে আসছেন। যার ফলে জমি খারিজ, পুকুর লিজ, খাস জমি বিতরনসহ ভূমিকার্যালয়ের প্রতিটি কাজে ইউএনও মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে থাকেন।
এছাড়াও অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে ভূয়া প্রকল্প এবং ভূয়া শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ, এডিবি, নন ওয়েস্ট কস্টসহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করে চলেছেন।
হাকিমপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী জানান, ইউএনওর কারনে সরকার ও দলের ব্যপক ভাবমূতি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে দল ইউএনওকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে।
এবিষয়ে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আজাহারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রতিটি কাজ নীতিমালা অনুযায়ী করা হয়েছে। অন্যায় দাবীর সাথে আপোষ না করায় তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। প্রতিটি কাজ তিনি সকলকে সরেজমিনে ঘুরে দেখার আহবান জানান।